বুধবার নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মেরি বারা। ছবি: এএফপি।
প্রায় এক দশক আগে ভারতে পা রাখলেও এ দেশের গাড়ি ব্যবসায় মার্কিন বহুজাতিক জেনারেল মোটরস-এর দখলদারি নামমাত্র। তা বাড়াতে এবং সেই সঙ্গে রফতানি কেন্দ্র হিসেবেও ভারতকে গড়ে তুলতে চায় সংস্থা। এ জন্য আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ১০০ কোটি ডলার বা ৬,৪০০ কোটি টাকা লগ্নি করবে জিএম।
বিভিন্ন বহুজাতিক গাড়ি সংস্থাই এই মুহূর্তে প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে যেতে গুরুত্ব দিচ্ছে ভারতকে। এ বার সেই পথে হাঁটতে চায় জিএম-ও। বুধবার সংস্থার সিইও মেরি বারা নয়াদিল্লিতে এই ঘোষণা করে বলেন, ‘‘বিশ্বের প্রথম সারির গাড়ি সংস্থা হিসেবে নিজের জায়গা ধরে রাখতে হলে ভারতের মতো ক্রমবর্ধমান বাজারে উপস্থিতি বাড়াতে হবে। আর তার জন্য নতুন লগ্নি না-করলে হবে না।’’ এ দিনই এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত গাড়ি সংস্থা সাংহাই অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন সঙ্গে যৌথ ভাবে জেনারেল মোটরস নতুন শেভ্রোলে গাড়ি তৈরির জন্য আগামী কয়েক বছরে ৫০০ কোটি ডলার লগ্নির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের লগ্নি পরিকল্পনা তারই অঙ্গ বলে জানান সংস্থার কর্তারা। তবে গুজরাতের হালোলে এ দেশে তাদের প্রথম কারখানাটি বন্ধ করে দিচ্ছে সংস্থা। পরিবর্তে মহারাষ্ট্রের তালেগাঁওয়ের কারখানাটির উপরই জোর দিচ্ছে তারা।
১৯৯৬-তে ভারতে যাত্রা শুরু করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এখানে প্রায় ১০০ কোটি ডলার লগ্নি করেছে জিএম। গত বছর ৫৬,৭০০টি গাড়ি বিক্রি করলেও অবশ্য ভারতের গাড়ি বাজারের মাত্র ১.৮% দখলে রয়েছে তাদের। গত বছর পর্যন্ত সংস্থার পুঞ্জীভূত লোকসানের বহর ২,৭৪০ কোটি টাকা।
সাম্প্রতিক কালে ভারতের গাড়ি বাজারের গতি কিছুটা শ্লথ। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০২০-তে আমেরিকা ও চিনের পরেই তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি বাজার হিসেবে উঠে আসবে ভারত। সে দিকে তাকিয়েই অন্য বহুজাতিক গাড়ি সংস্থাগুলিও ভারতে নতুন লগ্নির পরিকল্পনা নিচ্ছে। গত বছরও বারা জানিয়েছিলেন, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত তাঁদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংস্থার চিফ অব ইন্টারন্যাশনাল অপারেশন্স স্টিফেন জ্যাকবি জানিয়েছেন, ২০২০-তে ভারতে তাঁদের বাজার দ্বিগুণ করতে আগামী পাঁচ বছরে এ দেশেই তৈরি ১০টি নতুন গাড়ি আনবেন তাঁরা।
এর মধ্যে সংস্থাটি এ বছর তাদের এসইউভি ‘ট্রেইলব্লেজার’ ভারতের বাজারে আনবে। আগামী বছর আসবে এমপিভি ‘শেভ্রোলে স্পিন’।
পাশাপাশি শ্রমিকের মজুরি-সহ উৎপাদন খরচ কম হওয়ার জন্য নতুন বাজারগুলিতে রফতানির জন্য ভারতেই সেই সব গাড়ি তৈরির পথে হাঁটছে বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা। এ বার সেই পথে সামিল হবে জেনারেল মোটরসও-ও। জ্যাকবি এ দিন বলেন, ‘‘নতুন লগ্নির মাধ্যমে ভারতের বাজার ধরার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতের কম খরচের উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবেও এ দেশকেই জোর দিতে চাই।’’ ২০১৬-তে তাঁদের লক্ষ্য ৪০ হাজার গাড়ি রফতানি করা।