পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার প্রত্যাঘাত বা ভোটের আগে যুদ্ধের জিগির ওঠার হাত ধরে নরেন্দ্র মোদীর সরকার আগামী দিনে কোনও সুবিধা পাবে কিনা তা বলবে সময়। তবে অর্থনীতির ভাল রিপোর্ট কার্ড নিয়ে ভোটে যাওয়া সম্ভব হল না তাদের। বৃহস্পতিবার সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর জানাল, চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি নেমেছে ৬.৬ শতাংশে। যা গত পাঁচ ত্রৈমাসিকের মধ্যে সব থেকে কম।
অর্থনীতির অগ্রগতি সম্পর্কে আশঙ্কা বাড়িয়ে পুরো অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাসও আগের ৭.২% থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৭%। বিরোধীদের কটাক্ষ, পূর্বসূরি ইউপিএ-র জমানায় বৃদ্ধির হার খাটো করে দেখানোয় জুড়ি নেই মোদী সরকারের। কিন্তু নিজেদের সময়ে তা চাঙ্গার দাওয়াই অধরা।
ক্ষমতায় আসার পরেই জিডিপি মাপার ফিতে বদলেছে মোদী সরকার। সেই নতুন ফিতেয় মনমোহন জমানার বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া নিয়ে এর আগে কটাক্ষও করেছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু সেই মাপকাঠিতেই অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে খুব জোর চোট পেল তারা নিজেরাই।
মাথাব্যথা
• জিডিপি মাপার ফিতে পাল্টেও বৃদ্ধির হারে ধাক্কা।
• দিল্লির মসনদ দখলে মোদীর অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল চাঙ্গা অর্থনীতি। এখন ভোট বছরে এমন রিপোর্ট কার্ড প্রশ্নের মুখে ফেলবে তাঁদের।
• বিরোধীদের প্রশ্ন, সংস্কারের এত ঢাকঢোল পিটিয়েও বৃদ্ধি শ্লথ কেন?
• সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বৃদ্ধি এ ভাবে কমলে কর্মসংস্থান তো আরও ধাক্কা খাবে! যেখানে কাজ তৈরির জায়গা উৎপাদন ক্ষেত্রের বৃদ্ধির গতিও কমেছে।
• চিন্তা বাড়িয়ে কমেছে কৃষিতেও। বিশেষত কৃষক বিক্ষোভ যেখানে তীব্র।
আইআইএম-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক পার্থ রায়ের বক্তব্য, হালে জিডিপির হিসেব নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বৃদ্ধি কমায় চাহিদাও কমল কি না, সে প্রশ্ন উঠবে। তবে এর জের সাময়িক না দীর্ঘমেয়াদি, বুঝতে সময় লাগবে।
যদিও সরকারি মহলের মতে, চিনকে টপকে বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির দেশের তকমা এ বারও ধরে রেখেছে তারা। কারণ ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে পড়শি দেশের বৃদ্ধি নেমেছে ৬.৪ শতাংশে।
শিল্প মহলের একাংশ অবশ্য বলছে, এতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর সম্ভাবনা বাড়ল। এখন দেশের অর্থনীতির স্বার্থে সেটা যে জরুরি, তা নিশ্চয়ই বুঝবে তারা।