পিঠ চাপড়ে প্রাপ্তি রেটিং হুঁশিয়ারিও, ঘাটতিতে অখুশি মুডি’জ

ভোটের মুখে কল্পতরু হয়ে এক গুচ্ছ জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণা করতে গিয়ে যে এ বারে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা গেল না, বাজেট বক্তৃতায় তা কার্যত মেনে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১৩
Share:

প্রচার: প্রকল্প ঘোষণায় টেবিলে চাপড়। এ বার ঘাটতির হুঁশিয়ারিও। ছবি: রয়টার্স।

ব্যালটের লড়াইকে পাখির চোখ করে অন্তর্বর্তী বাজেটেও বিভিন্ন জনমোহিনী প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। রীতি-রেওয়াজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার কথা বলেছে আয়করদাতাদের একাংশকে। কিন্তু তা করতে গিয়ে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যের মধ্যে বেঁধে রাখতে না পারা ভারতের ক্রেডিট রেটিংয়ের পক্ষে আদৌ ভাল নয় বলে হুঁশিয়ারি দিল মুডি’জ ইনভেস্টর্স সার্ভিস।

Advertisement

ভোটের মুখে কল্পতরু হয়ে এক গুচ্ছ জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণা করতে গিয়ে যে এ বারে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা গেল না, বাজেট বক্তৃতায় তা কার্যত মেনে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। ওই লক্ষ্যমাত্রাকে জিডিপির ৩.৩% থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩.৪%। একই ভাবে ঘাটতি আরও কমানোর প্রতিশ্রুতি ভুলে বলে রাখা হয়েছে আগামী অর্থবর্ষেও তা ৩.৪ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা। আর ঠিক সেখানেই বিপদের লাল নিশান দেখছে মার্কিন মূল্যায়ন সংস্থাটি।

মুডি’জ স্পষ্ট জানিয়েছে, গত দুই অর্থবর্ষেও মোদী সরকার ঘাটতিকে লক্ষ্যের মধ্যে বেঁধে রাখতে পারেনি। আগামী বারও তা কতখানি সম্ভব হবে, সে বিষয়ে তারা সন্দিহান। বাজেটের পরে এই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞও। তাঁদের মতে, ভোট টানার লক্ষ্যে করা চাষিদের জন্য ঘোষণায় কিংবা অসংগঠিত ক্ষেত্রে পেনশনের বন্দোবস্ত করতে কেন্দ্রকে মোটা টাকা তুলে রাখতে হবে। আয়করের নিয়মে বদলের দৌলতে ১৮ হাজার কোটি টাকা আদায় কমবে বলে মানছে সরকারই। কিন্তু এই সব কিছুর পরেও যে ঘাটতি খাতায়-কলমে ৩.৪%, তার অন্যতম কারণ জিডিপি অনেকখানি বাড়বে বলে ধরে নেওয়া। শেষমেশ তা না হলে, ঘাটতি আরও চওড়া হওয়ার আশঙ্কা অমূলক নয়। মুডি’জের বক্তব্যে সেই আশঙ্কা স্পষ্ট।

Advertisement

ঘোর আপত্তি

• পর পর দু’বছর ঘাটতিকে লক্ষ্যে বাঁধতে ব্যর্থতা।
• আগামী বারেও তা পারা নিয়ে সংশয়।
• ভোটের মুখে চাষিদের থোক টাকা ও মধ্যবিত্তদের আয়করে সুবিধা দিতে গিয়ে বাড়তি বোঝা।
• রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে মূলধন জোগানো বাজেটে নেই।
• আগের বার বলা ৩ বিমা সংস্থা মিশিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে উচ্চবাচ্য নেই।
• কাজের কথা নয় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার কাছে বাড়তি ডিভিডেন্ড চাওয়াও।

কিছুটা ভাল

• আবাসন শিল্পকে চাঙ্গা করার চেষ্টা।
• পরিকাঠামোয় ব্যয় বৃদ্ধি।

কোনও দেশকে ধার দিয়ে তা ফেরত পাওয়া কত নিশ্চিত, সেই মূল্যায়নই হল তার ক্রেডিট রেটিং। ওই রেটিং যত ভাল, কম সুদে ধার পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। লগ্নির গন্তব্য হিসেবেও সেই দেশের আকর্ষণ বেশি। তাঁর জমানায় ভারত লগ্নির পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে বলে ‘বুক চাপড়ে’ দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আমজনতার পছন্দের বাজেট তৈরির জন্য নিজেদের পিঠ চাপড়ানির পরে রেটিং-হুঁশিয়ারির মুখে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement