এ বছর পুরো বাজার গিয়েছে সেকেন্ড-ফ্লাশ চায়ের। কিছু দিনের মধ্যে পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সামনের বছর কার্যত ‘ফলো অন’ দিয়েই মরসুম শুরু করবে দার্জিলিঙের চা। এই শিল্পের দাবি, আগামী বছর ফার্স্ট-ফ্লাশ দার্জিলিং চা উৎপাদন অন্তত ৪০% ধাক্কা খাবে।
এ বছর দার্জিলিঙে ফার্স্ট-ফ্লাশ চা তৈরি হলেও গত জুন থেকে পাহাড়ের আন্দোলনের জেরে তারপর থেকে সেকেন্ড-ফ্লাশ, বর্ষা ও শরতের আর কোনও চা-ই হয়নি। এই পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন আখ্যা দিয়ে চা শিল্পের দাবি ছিল, গোটা চা শিল্প স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে বছর তিনেক গড়াবে। কিন্তু পাহাড়ের আন্দোলন এখনও চলবে, তা আশঙ্কার বাইরে ছিল তাদের।
দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের (ডিটিএ) বক্তব্য, উপযুক্ত পাতা তোলার জন্য চা গাছের স্বাভাবিক উচ্চতা ২.৫ ফুট থাকার কথা। কিন্তু এখন তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এমনিতে গাছ বড় হলে ডালপালা ও পাতা দু’রকম ভাবে ছাঁটাই করা হয়। বছরের শেষের দিকে শীতের সময় বাগানের এক তৃতীয়াংশ গাছের অল্প ছাঁটাই (গড়ে ৬-৮ ইঞি) করা হয়। সেই গাছগুলি থেকে ফের তোলার মতো পাতা তৈরি হতে প্রায় ছ’মাস সময় লাগে। তত দিন বাগানের বাকি দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা থেকে তৈরি হয় ফার্স্ট ও সেকেন্ড-ফ্লাশ চা। দ্বিতীয়টি হল ‘রিজুভিনেশন প্রুনিং’। সাধারণত কোনও এলাকার চা গাছের উৎপাদনশীলতা ৫০% বা তারও বেশি কমলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে সেই গাছের প্রায় ১২-১৪ ইঞ্চি ছাঁটা হয়। কিন্তু এই গাছ থেকে উপযুক্ত পাতা তোলার জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রায় এক বছর। অপেক্ষা বেশি বলে বছরে মোট বাগান এলাকার ২.৫%-এর বেশি এলাকায় এই ছাঁটাইয়ের কাজ করা হয় না।
ডিটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু শনিবার বলেন, ‘‘এ বার বাগানগুলির যা অবস্থা তাতে বছরের শেষেও আর স্বাভাবিক ছাঁটাই-এর কাজ করা যাবে না। বরং গোটা বাগানের গাছেই তার চেয়ে অনেক বেশি দৈর্ঘ্যের ডালপালা ও পাতা ছাঁটাই করে স্বাভাবিক উচ্চতায় আনতে হবে। যা কার্যত রিজুভিনেশল প্রুনিং-এর সমান। ছাঁটাইয়ের জন্য গাছের উৎপাদনশীলতা কমবে। এ ছাড়া মাটির পুষ্টিও কমেছে। আশঙ্কা, ফার্স্ট-ফ্লাশ চায়ের উৎপাদন অন্তত ৪০% কমবে।’’