অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ফাইল ছবি
দেশের খুচরো মূল্যবৃদ্ধি টানা সাত মাস রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার (৬%) উপরে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস, চলতি অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকের আগে তা নিয়ন্ত্রণে আসা কঠিন। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানার দায়িত্ব কেন্দ্রের একার হতে পারে না। জিনিসের দামে ভারসাম্যের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্র ও রাজ্যকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাঁর আরও দাবি, যে সমস্ত রাজ্য পেট্রল-ডিজ়েলের শুল্ক কমায়নি সেখানে মূল্যবৃদ্ধির হার জাতীয় গড়ের থেকে বেশি।
তেল ও জিনিসের দাম নিয়ে বহু দিন ধরেই নাকানিচোবানি খাচ্ছে কেন্দ্র। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধী দলগুলি। নির্মলার বক্তব্যের পরে তারা মনে করাচ্ছে, করোনার সময়ে রোজগার হারিয়ে মানুষ যখন নাজেহাল, তখনই একতরফা ভাবে তেলের উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়ে রাজকোষ ভরেছে কেন্দ্র। অতীতে যখন বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমেছে তখন তার সুবিধা দেশবাসীকে না দিয়ে শুল্ক বাড়িয়ে সেই ফারাক ভরেছে। রাজ্যগুলিকে যাতে বর্ধিত শুল্কে ভাগ দিতে না হয়, সে জন্য বহু ক্ষেত্রে তা বাড়ানো হয়েছে সেস হিসেবে। বিরোধীদের বক্তব্য, অন্য সময়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সব পক্ষের অংশীদারির কথা কেন্দ্রের মনে থাকে না। এখন চাপে পড়ে সেই দায়িত্ব ও অংশীদারির কথাই তারা বলছে।
এ দিন দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধিকে আয়ত্তে আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। যেমন, ইস্পাতের মতো বেশ কয়েকটি কাঁচামালে রফতানি শুল্ক বসেছে। যাতে দেশে যথেষ্ট জোগান থাকে ও দামও থাকে আয়ত্তের মধ্যে। তাঁর বক্তব্যের মধ্যে রাজনীতি খোঁজা ঠিক হবে না দাবি করে নির্মলা বলেন, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির ধাক্কা যাতে সাধারণ মানুষের গায়ে না লাগে তার জন্য দু’বার তেলের শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। ফলে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমেছে। মূল্যবৃদ্ধিও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অথচ জিএসটি চালুর ফলে দেশে অভিন্ন পরোক্ষ কর কাঠামো সত্ত্বেও রাজ্যগুলির মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির বড় ফারাক রয়েছে। যে সব রাজ্য তেলের দাম কমায়নি সেখানেই তা জাতীয় গড়ের অনেকটা উপরে।
মূল্যবৃদ্ধি মোকাবিলার কথা বলতে গিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে আর্থিক নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঋণনীতি তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বলেছেন,রাশিয়ার উপরে পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধি যোঝার অস্ত্র হিসেবেই সেখান থেকে সস্তায় তেল কিনছে ভারত। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানিকৃত তেলে মস্কোর ভাগ ছিল ২ শতাংশের কম। এখন ১২%-১৩%। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কূটনীতির প্রশংসা করেন তিনি।