উদ্বোধন: ক্রিসিডেক্স চালু করছেন অরুণ জেটলি। শনিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
বস্ত্র ও চর্মশিল্পের জন্য মোদী সরকার বিশেষ প্যাকেজ দিয়েছে ঠিকই। আবাসন শিল্পকেও চাঙ্গা করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এই সব ক্ষেত্রের ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পে এখনও মনমরা ভাবই চলছে। বিশেষজ্ঞরা যা দেখে বলছেন, এর থেকেই স্পষ্ট, নোট বাতিলের ধাক্কা এখনও ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্প কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের পরিস্থিতি, এই ক্ষেত্রের শিল্পপতিদের মনোভাব জানতে নতুন সূচক চালু করল মোদী সরকার। সিডবি ও মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিল-কে এই সূচক তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। শনিবার অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ‘ক্রিসিডেক্স’ নামের এই নতুন সমীক্ষা-সূচক প্রকাশ করেছেন। বরাত, লাভের অঙ্ক, ঋণ কেমন মিলছে— এই সব মাপকাঠিতে তৈরি প্রথম বারের সমীক্ষাই বলছে, ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের মনোভাব এখন ‘সামান্য ইতিবাচক’। এটি অবশ্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের সমীক্ষার ফলাফল। পূর্বাভাস অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চে সামগ্রিক মনোভাবও ইতিবাচক-এর কোঠায় পৌঁছে যাবে।
তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল, বস্ত্র, চর্ম ও চর্মজ পণ্য, গয়না-দামি পাথর এবং আবাসন-নির্মাণ শিল্পেই আশাবাদীর হার সব থেকে কম। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, এই তিন মাসের সমীক্ষা বলছে, উৎপাদন ক্ষেত্রে আশাবাদীর হার পরিষেবা ক্ষেত্রের থেকে বেশি। আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ বলেন, ‘‘নোট বাতিল যে ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পেই সব থেকে বেশি ধাক্কা দিয়েছিল, এটা সত্যি। তবে তার জেরে এই শিল্পের কতখানি সংগঠিত ক্ষেত্রের আওতায় এসেছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’ তাঁর মতে, বিভিন্ন সংস্থা যদি এর পর আধার নম্বরের ধাঁচে পরিচয়পত্র পায় (যা বাজেটে বলা হয়েছে), তা হলে সেটাও তাদের সংগঠিত হওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে দেবে।
এখন হাল
কার কী মত:
শিল্পের ছবি
কে কেমন আশাবাদী:
• ভাল ৩৮
• সন্তোষজনক ৪৫
• খারাপ ১৭
• বস্ত্র ৩১
• গয়না, দামি পাথর ২০
• চর্ম, চর্মজ পণ্য ১৩
• আবাসন, নির্মাণ ২১
জেটলি বলেন, ‘‘দু’বছরে এক গুচ্ছ কাঠাগোমত সংস্কারের পরে অর্থনীতি থিতু হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পই নেতৃত্ব দেবে। কারণ এই ক্ষেত্রে উদ্যমের দক্ষতা বেশি। ফলে কাজের সুযোগও অনেক বেশি তৈরি হয়েছে।’’ নতুন সূচক তৈরির ফলে ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের কী কী দরকার, কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা-ও বোঝা যাবে এবং নীতি তৈরি করতে সুবিধা হবে বলে দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের।
ছোট শিল্পের উন্নয়ন ব্যাঙ্ক সিডবি-র সিএমডি মহম্মদ মুস্তাফা বলেন, ‘‘এই ক্ষেত্রের সম্পর্কে তথ্য এতই কম যে, ঋণদাতাদের কাছেও তথ্য থাকে না। ফলে ঋণের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়। কারণ সার্বিক ভাবে শিল্পের কী অবস্থা, তা জানতে সমস্যা হয়। এই সূচকের ফলে ঋণদাতাদের পক্ষেও সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।’’