রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতির দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বাজার।
বাজারে ভাল খবরের দেখা নেই। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ছাড়িয়েছে ব্যারেলে ৮২ ডলার। এর জেরে দেশে বহাল পেট্রল, ডিজেলের ঊর্ধ্বগতি। ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামে পতন চলছে। তার সঙ্গে চিন ও আমেরিকা একে অন্যের পণ্যে ফের আমদানি শুল্ক বসানোয় বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তাপ চড়েছে। বাজারের আশঙ্কা বাড়িয়েছে ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থাগুলিতে নগদের সঙ্কট। এক সঙ্গে এত প্রতিকূল খবরের জেরে গত সপ্তাহে সূচক নেমেছে অনেকটাই।
অন্য দিকে, ১ জুন থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে বর্ষার ঘাটতি ৯%। স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টি কম হয়েছে ৩১% অঞ্চলে। আগামী দিনেও যে ঘাটতি মিটবে, তা নিয়ে আশার কথা শোনাতে পারছে না কেউ। সব মিলিয়ে অর্থনীতির উপর এর প্রভাবও খুব একটা ভাল হবে না। এই অবস্থায় আপাতত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতির দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বাজার।
পরিকাঠামোয় ঋণদাতা আইএল অ্যান্ড এফএস কিছু ক্ষেত্রে ধার শোধে ব্যর্থ। এই ঘটনার জের পড়েছে শেয়ারে। অনেকের মতে, ইতিমধ্যেই স্বল্প মেয়াদে ঋণের সঙ্কট নিয়ে মূলধনী বাজারের ভয় দূর করতে ও ব্যাঙ্কগুলিকে আরও সহজে নগদ জোগাতে কিছু পদক্ষেপ করেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এ বার টাকার দামে পতনে রাশ টানতে ঋণনীতিতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা তাঁদের।
তবে যে সব কারণে সূচক পড়ছে, তা রাতারাতি শোধরানোর নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ, এই ক’দিনে লার্জ ক্যাপ সংস্থার শেয়ার নামলেও, পতন আরও বেশি হয়েছে মাঝারি (মিড ক্যাপ) ও ছোট সংস্থার (স্মল ক্যাপ) বহু শেয়ারের। ফলে মাথা নামিয়েছে মিড ও স্মল ক্যাপ ফান্ডের ন্যাভও। শেয়ার সূচক ফের না বাড়লে মিউচুয়াল ফান্ডের পথ বেয়ে যত লগ্নি বাজারে ঢুকছিল, তা কমার আশঙ্কা।
তার উপরে চলতি খাতে ঘাটতি কমাতে ১৯ রকম পণ্যে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে কেন্দ্র। এর জেরে সেগুলির দাম বাড়ার আশঙ্কা। আর তা হলে টান পড়বে চাহিদায়। ফলে ওই সব পণ্যের উপরে নির্ভরশীল সংস্থাগুলির শেয়ার দর পড়েছে। তবে যে সব সংস্থা দেশে সেগুলি তৈরি করে, এতে তারা উপকৃত হবে। তার সঙ্গেই কেন্দ্রের কোষাগারে ঢুকতে পারে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা।
(মতামত ব্যক্তিগত)