ইলন মাস্ক। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে শর্ত-পাল্টা শর্তের দড়ি টানাটানির শেষের ইঙ্গিত!
অচিরেই ভারতের রাস্তায় গড়াতে পারে আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ির চাকা। শুক্রবার কেন্দ্র বৈদ্যুতিক গাড়ি নীতি ঘোষণা করে জানিয়েছে, কোনও সংস্থা বিদেশ থেকে সেগুলি আমদানি করলে আপাতত শুল্ক ছাড় পাবে। তবে তিন বছরের মধ্যে এ দেশে ন্যূনতম ৫০ কোটি ডলার (৪১৫০ কোটি টাকা) লগ্নিতে কারখানা গড়া-সহ একগুচ্ছ শর্ত মানতে হবে। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, মাস্ক এই সুবিধাই চেয়েছিলেন। ফলে এ বার কেন্দ্র-টেসলার জট খুলতে পারে।
একাংশের মতে, এক দিকে কেন্দ্র বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়ার আগে মাস্কের থেকে লগ্নির প্রতিশ্রুতি চাইছিল। অন্য দিকে, বিদেশি সংস্থাকে ছাড় দেওয়ার বিরোধী ছিল দেশীয় গাড়ি সংস্থাগুলি। নতুন নীতিতে নির্দিষ্ট দামের নির্দিষ্ট সংখ্যক গাড়িতে অল্প সময়ের জন্য কম শুল্কে আমদানির শর্ত বেঁধে এবং সেই সুবিধা পেতে ভারতে লগ্নির বাধ্যবাধকতা তৈরি করে কার্যত এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছে সরকার।
এ দিন বৈদ্যুতিক চার-চাকার গাড়ির নীতিটি প্রকাশ করে ভারী শিল্প মন্ত্রক। এখন এ দেশে এমন গাড়ি আমদানি করলে ৭০-১০০% শুল্ক বসে। নয়া নীতিতে পাঁচ বছরের জন্য তা কমে হবে ১৫%। তবে কম শুল্কে ৩৫,০০০ ডলার বা তার বেশি দামি (গাড়ির দাম, বিমা, পরিবহণ খরচ ধরে) গাড়ি বছরে সর্বাধিক ৮০০০টি আনা যাবে (মোট ৪০,০০০টি)। সংস্থাটিকে লগ্নির পাশাপাশি পাঁচ বছরের মধ্যে এ দেশে কারখানায় উৎপাদন চালু করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে নির্দিষ্ট হারে স্থানীয় ভাবে যন্ত্রাংশের জোগান। এ দিন রাতেই অর্থ মন্ত্রক শুল্ক ছাড়ের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। শিল্পোন্নয়ন ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সচিব রাজেশ কুমার সিংহের বক্তব্য, ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ি বেচতে আগ্রহী অনেকে। তবে শুল্কে ছাড়ের আগে দেশে ওই গাড়ি নির্মাণ ও তার যন্ত্রাংশ শিল্পের পরিবেশ তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার।
এ দিন রাত পর্যন্ত গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের সংগঠন এসএমইভি-র প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে যন্ত্রাংশ শিল্পের সংগঠন অ্যাকমার প্রেসিডেন্ট শ্রদ্ধা সুরী মারওয়াহ এই নীতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এতে দেশেও জোগান-শৃঙ্খল পোক্ত হবে। উপদেষ্টা ইক্রা-র কর্তা শামশের দেওয়ানের মতে, বিদেশি প্রযুক্তি ও পণ্যের নাগাল পেতে সাহায্য করবে নীতিটি।