ডানকান গোষ্ঠীর চারটি ‘রুগ্ণ’ বাগানের পরিচালনভার হস্তান্তরের জন্য চারটি সংস্থাকে প্রাথমিক ভাবে বাছাই করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছিল টি বোর্ড। কিন্তু আদালতের সম্মতি ছাড়া এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না বাণিজ্য মন্ত্রক। তাই যাবতীয় তথ্য আগে আদালতকে জানাবে কেন্দ্র। শনিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সচিব রীতা তেওটিয়া।
এ বছরের গোড়ায় উত্তরবঙ্গে ডানকান গোষ্ঠীর সাতটি সঙ্কটজনক বাগানের দায়িত্ব অন্য সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপান উতোর এখনও চলছে। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালতেও। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ও পরে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছিল ডানকান গোষ্ঠী। মামলা চললেও অবশ্য পরিচালনভার হস্তান্তরের জন্য আগ্রহপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখেনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। তবে বেঞ্চ একই সঙ্গে জানিয়েছিল, ওই প্রক্রিয়া চালু রাখতে পারলেও আদালতের আগাম অনুমতি ছাড়া বাগানগুলি অন্য কোনও সংস্থার হাতে তুলে দিতে পারবে না কেন্দ্র।
সরকারি সূত্রের খবর, বার কয়েক দরপত্র চাওয়ার পরে শেষে বীরপাড়া, গরগণ্ডা, হান্টাপাড়া ও ধুমচিপাড়া— এই চার বাগানের জন্য চারটি সংস্থাকে বাছাই করেছে টি বোর্ড। সেই তালিকা বাণিজ্য মন্ত্রককে পাঠিয়েছে তারা। সাধারণ ভাবে সব খতিয়ে দেখে বাছাই তালিকা চূড়ান্ত করার কথা মন্ত্রকেরই।
এ দিন রফতানি সংক্রান্ত এক আলোচনাচক্রের পরে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তেওটিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তাদের সম্মতি ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। এ নিয়ে যা তথ্য বা সুপারিশ পাওয়া গিয়েছে, তা আদালতের কাছে পেশ করা হবে।’’
উল্লেখ্য, ডানকানের ওই ৭ বাগানের জন্য গোড়া থেকেই যোগ্য সংস্থা খুঁজতে হয়রান হয়েছে টি বোর্ড। বার কয়েক আগ্রহপত্র চাওয়ার পরে এখনও ডিমডিমা, লঙ্কাপাড়া, তুলসীপাড়া বাগানের জন্য সাড়া মেলেনি। বরং ফের আগ্রহপত্র চেয়েছে বোর্ড। এর মধ্যে ডিমডিমা ছাড়া বাকি বাগানগুলি অবশ্য বিআইএফআর-এর আওতায় ছিল।
যে-সব শর্তে বাগান পরিচালনার ভার হস্তান্তরের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি যথেষ্ট আকর্ষণীয় নয় বলে আগেই অভিযোগ তোলেন চা শিল্পমহলের অনেকে। তাঁদের দাবি, রুগ্ণ বাগান কিনতে চা শিল্প সংক্রান্ত আইনের কিছু অংশ সংশোধন জরুরি। সার্বিক ভাবে চা শিল্পের প্রসারে আরও কিছু নিয়ম শিথিল করার প্রস্তাবও উঠেছে। যেমন, চা চাষের ক্ষেত্রে একটি ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ নিতে হয়। সেই ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর। তেওটিয়া জানান, বাণিজ্য মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।