বাণিজ্য নিয়ে চিনের সঙ্গে রেষারেষি তুঙ্গে। এই অবস্থায় অন্যান্য দেশের পণ্যেও আরও আমদানি শুল্ক বসানোর হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটারে তোপ দাগলেন, যে সব দেশ বাণিজ্যে আমেরিকাকে সমান সুবিধা দেয় না, তাদের উপরে কর চাপানো হবে। যদিও নির্দিষ্ট কারও নাম নেননি তিনি। তবে মনে করা হচ্ছে এ বার্তা ভারত, ব্রাজিলের মতো কিছু দেশের জন্যই। কারণ, ক’দিন আগে ভারতকে ‘শুল্কের রাজা’ তকমা দিয়ে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। ব্রাজিলের দিকে আঙুল তুলেছিলেন ইচ্ছে মতো কর চাপানোর।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে দ্বিমুখী নীতি নিয়েছেন ট্রাম্প। প্রথমত, গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করছে তাঁর প্রশাসন। যেমন, কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। একই চেষ্টা চলছে জাপান, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও। আবার কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে হয়েছে নতুন উত্তর আমেরিকা অবাধ বাণিজ্য চুক্তি। দ্বিতীয়ত, যে সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে ঘাটতি রয়েছে, তাদের উপরে মোটা আমদানি শুল্ক চাপিয়ে টেনে আনা হচ্ছে আলোচনার টেবিলে। শুধু চিন নয়, ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হওয়া ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যের উপরেও শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা।
টুইটারে ট্রাম্প জানিয়েও দিয়েছেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে সমঝোতায় আসার লক্ষ্যেই শুল্ক চাপানোর নীতি নিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সমঝোতার জন্যও শুল্ক গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনও দেশ বাণিজ্যে ন্যায্য সুবিধা না দেয়, তা হলে তাদের উপরে শুল্ক চাপানো হবে।’’
ইতিমধ্যেই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথা শুরু করেছে আমেরিকা। তবে স্বভাবসুলভ কটাক্ষ ছুড়ে দিতেও ছাড়ছেন না ট্রাম্প। সম্প্রতি মন্তব্য করেন, তাঁকে খুশি করার জন্যই নাকি চুক্তি করতে চাইছে ভারত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ভাবে নরমে-গরমে চাপ বাড়ানো তাঁর কৌশল। শুল্ক নিয়ে টুইট বার্তাও
এর বাইরে নয়।
এ দিকে, হোয়াইট হাউস বলেছে, চিনের সাংহাইতে নভেম্বরে হতে চলা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনে তারা উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাবে না। অনেকেরই আশঙ্কা, এতে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংঘাত আরও জোরালো হতে পারে। ইতিমধ্যেই ২৫,০০০ কোটি ডলারের চিনা পণ্যে ২৫% শুল্ক বসিয়েছে আমেরিকা। হুমকি দিয়েছে বাকি পণ্যের আমদানিতে কর বসানোরও।