ফাইল চিত্র।
ঠিক ছিল, অর্থনীতির হাল পর্যালোচনা করতে অর্থমন্ত্রী ও আমলাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে হাল ফেরাতে চটজলদি কোনও দাওয়াই ঘোষণা করা যাবে না বুঝে শেষমেশ পিছিয়ে দেওয়া হল সেই আলোচনা। যদিও গোঁত্তা খাওয়া অর্থনীতির মুখ আবার উপর দিকে ফেরাতে ত্রাণ প্রকল্প (স্টিমুলাস প্যাকেজ) জরুরি কি না, তা নিয়ে পুরোদমে আলোচনা শুরু হল এ দিনই। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশে অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত মন্ত্রকগুলির সঙ্গে বৈঠক শুরু করলেন অরুণ জেটলি।
ঠিক হয়েছে, অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্র ধরে সমস্যার সমাধান ভাবা হবে। খোঁজা হবে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার রাস্তা। খতিয়ে দেখা হবে ত্রাণ প্রকল্পের প্রয়োজনিয়তা। তারপরে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। এ দিন জেটলির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী সুরেশ প্রভু, রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অতিরিক্ত প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র, নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ প্রমুখ।
শুধু তা-ই নয়, আগামীকাল মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটির বৈঠকে ফের অর্থনীতির হাল-হকিকৎ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। ৬ অক্টোবর জিএসটি পরিষদের বৈঠকে রফতানিকারীদের কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া নিয়েও চিন্তা-ভাবনা চলছে।
চলতি অর্থবর্ষের শুরুতেই বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে। রফতানি না-বাড়ায় বৃদ্ধি পাচ্ছে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতি। বেসরকারি লগ্নি, বাজারে চাহিদাও স্তিমিত। সূত্রের খবর, দেশীয় শিল্পপতিরা কেন লগ্নি করছেন না আর কেনই বা রফতানি বাড়ছে না, তা নিয়েই মোদী সব থেকে বেশি চিন্তিত।
কিন্তু তা হলে বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হল কেন?
সরকারের একটি সূত্রের বক্তব্য, বিরোধীরা অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদী নিজেই অর্থ মন্ত্রক-সহ পুরো সরকার চালান। এর পরে তিনি পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বৈঠক বসলে প্রশ্ন উঠত, এতদিন কি প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতির হাল জানতেন না? স্বাভাবিক ভাবেই প্রত্যাশা তৈরি হত ত্রাণ প্রকল্প গোছের কোনও ঘোষণার। নইলে বলা হত, মোদী আলোচনা করলেন ঠিকই, কিন্তু অর্থনীতির হাল ফেরানোর দাওয়াই দিতে পারলেন না। ঘোষণা করতে পারলেন না নির্দিষ্ট নীতি। বৈঠক স্থগিত রাখার এটিও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ক্ষমতার অলিন্দের অনেকে।
তা ছাড়া অর্থ মন্ত্রকের একটি সূত্রের যুক্তি, এখনই শিল্প বা রফতানির জন্য ত্রাণ প্রকল্প দিতে গেলে ব্যয় বাড়বে। নয়তো কর ছাড়ের জন্য আয় কমবে। কঠিন হবে রাজকোষ ঘাটতিতে রাশ টানা। তাই এই সব দিক বিবেচনার পরে নির্দিষ্ট ঘোষণার সময়েই মোদীর সামনে আসার সম্ভাবনা।