প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে ‘সেঞ্চুরি’-র আরও কাছে পৌঁছে গেল ডিজ়েল। আজ, শুক্রবার ৩৫ পয়সা বেড়ে কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে তার দাম হল লিটারে ৯৮.৭৩ টাকা। পেট্রল পৌঁছেছে ১০৭.৪৪ টাকায়। বৃহস্পতিবারের থেকে ৩৩ পয়সা বেশি। তেলের টানা দাম বৃদ্ধি নিয়ে এ দিন মোদী সরকারকে ফের তুলোধনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। টুইটে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ভারত সরকার আমাদের জনগণের সঙ্গে নিষ্ঠুর ঠাট্টা করছে।’’
তবে সমালোচনা উড়িয়ে রাজ্যে ভোটের মুখে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী উপেন্দ্র তিওয়ারির জবাব, তেলের দামে কিছু আসে-যায় না। কারণ, ৯৫% মানুষ পেট্রল ব্যবহার করেন না। তাঁর আরও যুক্তি, ২০১৪ সালের (যে বছর প্রথম ক্ষমতায় আসে মোদী সরকার) সঙ্গে মাথা পিছু আয়ের তুলনা করলে নাকি আদতে তেলের দাম বাড়েইনি। বিরোধীরা কেন্দ্রকে আক্রমণ করার বিষয় পাচ্ছেন না। জবাব শুনে ‘বিস্মিত’ সাধারণ মানুষ। দামি ডিজ়েলের ধাক্কায় খাদ্যশস্য, ফল, আনাজ-সহ বিভিন্ন পণ্যের বাড়তে থাকা দরে ইতিমধ্যেই জেরবার যাঁরা।
পেট্রলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইতিমধ্যেই বহু রাজ্যে ডিজ়েল ১০০ টাকা পেরিয়েছে। এখন সন্ত্রস্ত হয়ে সেই মুহূর্তের অপেক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্র অবিলম্বে দামে রাশ টানার ব্যবস্থা না-করলে যে নিস্তার নেই, তা পরিষ্কার। বৃহস্পতিবারই আলিপুরদুয়ারে তা ৯৯.৪৭ টাকা ছুঁয়েছিল। আজ আরও বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল বেরনোর পরে ৪ মে থেকে আজ পর্যন্ত, সাড়ে পাঁচ মাসে কলকাতায় পেট্রল দামি হয়েছে লিটারে ১৬.৮২ টাকা, ডিজ়েল ১৫.১২ টাকা। গত ২ জুলাইয়ে রাজ্যে পেট্রল প্রথম ‘শতরান’ হাঁকিয়েছিল উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের কিছু জায়গায়। সে দিন কোচবিহার শহর, আলিপুরদুয়ার শহর ও দার্জিলিং সদর শহর, ঝাড়গ্রামে দাম লিটারে ১০০ টাকা ছাড়ায়। ৬ জুলাই ১০০-র তালিকায় ঢোকে কলকাতা। এ বার ডিজ়েলেও তার পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কায় দিন গুনছেন রাজ্যবাসী।
তেল নিয়ে গোটা দেশ যখন সন্ত্রস্ত, তখন মোদী সরকার লিটারে পেট্রল থেকে ৩২.৯০ টাকা উৎপাদন শুল্ক ঘরে তুলছে, ডিজ়েলে ৩১.৮০ টাকা। এ দিনই তেলমন্ত্রী বলেছেন, কোভিড-পূর্ব সময়ের থেকেও তেলের চাহিদা বেড়েছে। অর্থাৎ, বেড়েছে কেন্দ্রের
আয়ও। তবে দিশাহারা আমজনতাকে সুরাহা দিতে শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত নেই। এ দিন টুইটে মোদী সরকারকে ‘তোলাবাজ’ তকমা দিয়ে রাহুল ব্যঙ্গ করেছেন একটা নতুন শব্দ— ফিলিয়োনেয়ার ব্যবহার করে। তার নীচে লেখা ‘‘সৌজন্যে মোদী সরকারের জ্বালানি লুঠ।’’ তাঁর ইঙ্গিত, যাঁরা গাড়িতে এখন পুরো ট্যাঙ্ক তেল ভরতে পারবেন তাঁরা ‘ফিলিয়োনেয়ার’, কোটিপতি বা বিলিয়োনেয়ারের মতো।