ট্রাম্প প্রশাসন অনড়, আশ্বাস দিল না সৌদি

মে থেকেই ভারত-সহ আটটি দেশের ইরান থেকে তেল কেনার নিষেধাজ্ঞায় ছাড় উঠে যাবে বলে সোমবার জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এর জেরে অশোধিত তেলের জোগান ও দাম নিয়ে সংশয় ছড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০২
Share:

সমস্যায়: পারস্য উপসাগরে ইরানের তেল উত্তোলন কেন্দ্র। কিন্তু আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার ফলে তাদের তেল রফতানি কমেছে। রয়টার্স

ইরানের চাবাহার বন্দরে ভারতের কাজ চালানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না, আশ্বাস দিচ্ছে আমেরিকা। কিন্তু কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ইরান থেকে তেল কেনার নিষেধাজ্ঞায় ভারতকে আর ছাড় দিতে রাজি নয় ওয়াশিংটন। তাদের বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদ রুখতে তারা যেমন ভারতের পাশে থাকে, তেমনই তেল কেনার প্রশ্নে ভারতও আমেরিকার পাশে দাঁড়াক। এ দিকে আবার ভোটের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কপালে ভাঁজ বাড়িয়ে বুধবার সৌদি আরবও জানিয়েছে, মজুত ভাণ্ডার যথেষ্ট। তাই এখনই উৎপাদন বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের। ফলে সব মিলিয়ে তেলের জোগানে টান পড়লে দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বিভিন্ন মহলের।

Advertisement

মে থেকেই ভারত-সহ আটটি দেশের ইরান থেকে তেল কেনার নিষেধাজ্ঞায় ছাড় উঠে যাবে বলে সোমবার জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এর জেরে অশোধিত তেলের জোগান ও দাম নিয়ে সংশয় ছড়িয়েছে। এই অবস্থায় আশা ছিল সৌদি আরব হয়তো উত্তোলন বাড়াবে। কিন্তু সৌদি তেল মন্ত্রী খালিদ আল-ফলিহ্ জানিয়েছেন, ইরান ও ভেনেজুয়েলায় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিশ্বে মজুত ভাণ্ডার বাড়ছে। ফলে এখনও কোনও কিছু করার প্রয়োজন নেই। তবে তাদের ক্রেতাদের অনিষ্টয়তার মধ্যে পড়তে দেওয়া হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন ফলিহ্‌।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ‘আগ্রাসী পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আল খামেনেই। তাঁর হুমকি, ‘‘আমরা যতটা প্রয়োজন মনে করব, ততটাই তেল রফতানি করব।’’ রাশিয়ারও দাবি, ওই সিদ্ধান্ত আমেরিকার আগ্রাসী ও বেপরোয়া মনোভাবের পরিচায়ক।

Advertisement

তেল নিয়ে এই অনিশ্চয়তার মধ্যে ভারতের দাবি, বিকল্প তৈরি। তার পাশাপাশি সমাধান সূত্র খুঁজতে আমেরিকা-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলছে তারা। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আমেরিকার সিদ্ধান্তের পরে নয়াদিল্লিতে দূত পাঠিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের কর্তা অ্যালিস ওয়েলসের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে সাউথ ব্লক। ভারতের আর্জি, ওই সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনা করুক আমেরিকা। কিন্তু এই ছাড়ের মেয়াদ আর বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন ওয়েলস। তাঁর বক্তব্য, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ইরানকে চাপে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মার্কিন প্রশাসন ভারতকে বলেছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা সব রকম ভাবে ভারতের পাশে রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা চায়, বিনিময়ে ভারতও ইরান-নীতির প্রশ্নে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়াক। যদিও কেন্দ্রীয় সূত্রে খবর, প্রথমে মার্কিন পণ্যে বাণিজ্য আর এ বার ইরানের তেল, এই দুই ক্ষেত্রেই ট্রাম্প প্রশাসন যে ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা মোটেও খুশি করেনি ভারতকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement