Union Budget 2024-25

কেন্দ্রের বঞ্চনা-তত্ত্বের ঊর্ধ্বে উঠে কি সমন্বয়ে জোর রাজ্যের

বাজেটকে সাধারণ ও দরিদ্র জনতার স্বার্থবিরোধী বলে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৬:৪৬
Share:

(বা দিকে) নরেন্দ্র মোদী, (ডান দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রকাশ্যে কেন্দ্রীয় বাজেটের কড়া সমালোচনা করলেও, বরাদ্দ আদায়ের লক্ষ্যে সেই মোদী সরকারের সঙ্গেই কি যোগাযোগ বাড়ানোয় বাড়তি জোর দিচ্ছে নবান্ন? এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। বিশেষ করে নীতি আয়োগের পরবর্তী বৈঠকে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।

Advertisement

মঙ্গলবার তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই বাজেটকে সাধারণ ও দরিদ্র জনতার স্বার্থবিরোধী বলে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। তবে প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই বাজেটে পরিকাঠামো, গ্রামোন্নয়ন, কৃষি ইত্যাদি খাতের বরাদ্দে যে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে আখেরে রাজ্যগুলিই লাভবান হবে। যদিও তার জন্য কেন্দ্রের বৈঠকগুলিতে যোগ দিতে হবে এবং বিভিন্ন কাজে বাড়াতে হবে সমন্বয়। সে ক্ষেত্রে বহু প্রকল্পে আর্থিক সুবিধাও পাওয়া সম্ভব।

ঘটনাচক্রে, বাজেট পেশের চারদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যসচিব প্রতিটিদফতরকে লিখিত ভাবে জানান, কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দিতে হলে, সংশ্লিষ্ট বার্তা পাওয়া মাত্রই কালক্ষেপ না করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সময় থাকতে সরকার সেই প্রস্তাব বিবেচনা করবে। প্রবীণ আধিকারিদের একাংশের মতে, এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে সমস্যা হয় রাজ্যের—

Advertisement

এক, কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকে রাজ্যের অফিসারদের উপস্থিতি কার্যত না থাকার মতোই। ফলে বরাদ্দ পেতে রাজ্যকে সহযোগিতা করার জন্য কাউকে পাওয়া যায় না সব সময়ে। দুই, বিভিন্ন প্রকল্পের নজরদারি বা পর্যালোচনার জন্য পাঁচ-সাত দিনের নোটিসে বৈঠক ডাকে কেন্দ্র। সেখানে রাজ্যের অফিসার পাঠানো হবে কি না, সেই অনুমতি নিতে অনেকগুলি ধাপ পার হতে হয়। তাই বহু সময়েই বৈঠকগুলিতে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব থাকে না। দু’টি ক্ষেত্রেই বিরূপ ফল ভুগতে হয় রাজ্যকে।

প্রবীণ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত থাকে জমি। জট ছাড়িয়ে তা পাওয়ার রাস্তা সুগম করলেই এই খাতে বিপুল সুবিধা মিলতে পারে। কিন্তু তাতে কেন্দ্রের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় প্রয়োজন। আবার বাজেট বরাদ্দ ক্ষেত্রবিশেষে বহু ধরনের প্রকল্পের মধ্যে ভাগ করা থাকে। ফলে একটি দফতরের অধীনেই একাধিক প্রকল্পে আর্থিক সুবিধা পাওয়া সম্ভব।

এ বারের বাজেটে গ্রামোন্নয়নে ২.৬৬ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ঘোষণা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার চতুর্থ দফা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) অতিরিক্ত তিন কোটি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শহরে এই প্রকল্পে দরিদ্রদের জন্য এক কোটি বাড়ি তৈরিতে বরাদ্দ হয়েছে ১০ লক্ষ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে ১০০টি বড় শহরে জল সরবরাহ, নিকাশি এবং তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন নির্মলা।

এই অবস্থায় বকেয়ার তথ্যপ্রমাণ-সহ পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নিয়ে চলতি সপ্তাহেই নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকও। দীর্ঘকালীন বঞ্চনা-তত্ত্বের ঊর্ধ্বে উঠে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় বাড়লে বরাদ্দের প্রশ্নে অনেক সমস্যাও এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement