তথ্যপ্রযুক্তি, ই-কমার্স ও নতুন উদ্যোগের (স্টার্ট আপ) অভাবে কলকাতায় তলানিতে ঠেকেছে অফিস তৈরির জায়গার চাহিদা।
মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, পুণেতে আগের তুলনায় অফিস তৈরির জায়গার চাহিদা বাড়ছে। কমছে অফিস তৈরির জন্য ফাঁকা পড়ে রয়েছে, এমন জায়গা। ব্যতিক্রম কলকাতা। সেখানে ২৭% অফিস তৈরির জায়গা ফাঁকা
পড়ে আছে চাহিদার অভাবে। দিল্লিতে ওই জায়গা আরও বেশি। কিন্তু সেখানে মূল কারণ বাড়তি জোগান।
কলকাতায় এই বিপুল পরিমাণে ফাঁকা জায়গা স্থানীয় নির্মাতাদের কপালে ভাঁজ ফেলছে। চাহিদার অভাবে লক্ষাধিক বর্গ ফুট অফিস তৈরির জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এখানে অফিস তৈরির জন্য জায়গার সিংহভাগই নেয় তথ্যপ্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট পরিষেবা সংস্থা। মূলত রাজারহাট ও সল্টলেকের পরিকাঠামো এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য। সেই তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পেও বড় নতুন বিনিয়োগ তেমন আসেনি। প্রয়োজন পড়েনি নতুন অফিসেরও।
মোটা লগ্নিতে তৈরি ঝাঁ চকচকে অফিস বিক্রি করার তাগিদে স্থানীয় নির্মাণ শিল্পমহল এ বার তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের দ্বারস্থ হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে তাদের প্রস্তাব, ওই শিল্পের সংস্থাগুলিকে বৈঠকের জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবে তারা। নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই-এর দাবি, রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি নিশ্চিত করতে পারলে, নির্মাণ শিল্পমহলের পক্ষে লাভের টাকা ঘরে তোলা সহজ হবে।
ক্রেতা কই
শহর জায়গা খালি (%)
•
বেঙ্গালুরু ৩.৮
•
পুণে ৫.৫
•
হায়দরাবাদ ৯
•
চেন্নাই ১১
•
মুম্বই ১৮
•
কলকাতা ২৭
•
দিল্লি ৩০
তথ্যসূত্র : জোনস লাং লাসেল
চাহিদার ঊর্ধ্বগতি যে সব শহরে রয়েছে, তার মূলে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের রমরমা। বিশেষজ্ঞ সংস্থা সিবিআরই-র সমীক্ষা বলছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় ৮% বেশি অফিস লিজ বা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। সংস্থার দাবি, মোট লেনদেনের ৩৭% তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের দখলে।
২০১৬ সালে অফিস তৈরির জায়গার চাহিদা সংক্রান্ত তথ্য -পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে এ রাজ্যের দৈন্যের ছবি। বিশেষজ্ঞ সংস্থা জোনস লাং লাসেল-এর সমীক্ষা অনুযায়ী দেশের প্রায় সব বড় শহরেই ফাঁকা অফিস তৈরির জায়গা কমছে। বেঙ্গালুরু, পুণে ও হায়দরাবাদে সবচেয়ে কম ফাঁকা জায়গা। এর মূলেও রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও ই-কমার্সের রমরমা। বেঙ্গালুরুতে ফাঁকা জায়গা মাত্র ৩.৮%, পুণেতে ৫.৫% ও হায়দরাবাদে ৯%। কলকাতা ও দিল্লি ব্যতিক্রম। কলকাতায় ২৭% ফাঁকা অফিস পড়ে রয়েছে। মূলত সরবরাহ অত্যধিক হওয়ার কারণে দিল্লিতে ৩০% ফাঁকা পড়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজ্যে রাসায়নিক ব্যবসায় সিআইএল
কলকাতায় চাহিদার এই অভাব সরবরাহের ক্ষেত্রেও ছাপ ফেলেছে। নতুন প্রকল্প তৈরি করতে ভরসা পাচ্ছে না নির্মাণ সংস্থাগুলি। পরিস্থিতি এতটাই বেহাল যে নির্মীয়মান প্রকল্পে কাজের গতি কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের খবর। পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রকল্প সম্পূর্ণ করার সময়সীমা। কারণ যে ফাঁকা জায়গা পড়ে রয়েছে, তারই খদ্দের পাচ্ছে না নির্মাণ সংস্থাগুলি।