বর্তমানে অশোধিত সোনার উপরে আমদানি শুল্কের হার ১৪.৩৫%। শোধন করা হলে ১৫%। প্রতীকী ছবি।
চোরাপথে সোনা ঢুকছে দেশে। সূত্রের দাবি, তার পরিমাণ এতটাই বেশি যে ব্যবসা বন্ধ করতে হয়েছে বেশিরভাগ সোনা শোধনাগারকে। বেশ কয়েকটি বন্ধের মুখে দাঁড়িয়ে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, চোরাচালানে আমদানি শুল্ক লাগে না। সরকারি ভাবে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক গুনতে হয়। বর্তমানে অশোধিত সোনার উপরে আমদানি শুল্কের হার ১৪.৩৫%। শোধন করা হলে ১৫%। তাদের মতে, এর ফলে আইনি পথে সোনা শোধন করে বিক্রি করার সময় শোধনাগারগুলির নেওয়া দাম দাঁড়াচ্ছে অনেকটাই বেশি। বাজারে চোরাচালানের সস্তা সোনার পরিমাণ দ্রুত বাড়ায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাচ্ছে তারা। ব্যবসা হারানোয় একাংশের পক্ষে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়ছে। একই কারণে সঙ্কটে পড়ছে শোধন করা সোনা আমদানিকারী সংস্থাগুলি। কেন্দ্রের কাছে সোনা শোধনাগারগুলির সংগঠন এবং শোধন করা সোনা আমদানিকারী সংস্থাগুলির দাবি, অবিলম্বে আমদানি শুল্ক কমানো না হলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে। বেকারত্ব বাড়বে।
অ্যাসোসিয়েশন অব গোল্ড রিফাইনারিজ় অ্যান্ড মিন্টস-এর সেক্রেটারি হর্ষদ আজমেরা বলেন, ‘‘গত অগস্টে সোনার আমদানি শুল্ক ৫% বাড়িয়ে কেন্দ্র ১৫% করেছিল। তার পর থেকেই দেশে এর চোরাচালান বিপুল বেড়েছে। এটা রুখতে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। না হলে সৎ পথে ব্যবসা করা সংস্থাগুলি মার খাবে।’’ তাঁর দাবি, শোধন করা সোনা আমদানিতে ১৫% শুল্ক বসে। অশোধিত হলে ১৪.৩৫%। এই ছাড়টুকু শোধন সংক্রান্ত খরচ, ব্যাঙ্কের সুদ ইত্যাদি খাতে কিছুটা সুরাহা দিতে। কিন্তু আদতে দুই হারই অনেকটা উঁচু। বিশেষত চোরাপথে আনা সোনায় যেহেতু কোনও শুল্কই লাগে না। ফলে বাজারদরের থেকে সেগুলি অন্তত ৫% কমে বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই শোধনাগারগুলির বেশি দামের সোনা বিকোচ্ছে না। আইনি পথে সোনা আমদানিকারী সব সংস্থাই এতে বিপাকে পড়ছে।
আজমেরা জানান, ভারতে মোট ৪৪টি সোনার শোধনাগার রয়েছে। সেখানে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে প্রায় এক লক্ষ মানুষ কাজ করেন। দেশে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৮০০ টন সোনা আমদানি হয়। এর মধ্যে ৩০০ টন সরবরাহ করে শোধনাগারগুলি। শুল্কের ফলে সৃষ্টি হওয়া অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে প্রায় ৯০% শোধনাগারই বন্ধ হয়েছে।