Coronavirus

ঝুঁকির হাজারো ফাঁকফোকর না-ভরেই লকডাউন হল কেন!

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের অভিযোগ, “এটা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে, লক-ডাউনের মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং কার্যকর করা হয়েছে মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে। কার্যত কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই। দুর্ভাগ্যজনক।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০৬:৩৯
Share:

লকডাউন: সুনসান রাস্তা। ছবি: পিটিআই।

করোনা-সংক্রমণ রুখতে দেশ জোড়া লক-ডাউনই যদি একমাত্র পথ হয়, তবু তার নীল নকশা তৈরির সময়ে কি যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করেছিল মোদী সরকার? আগেভাগে ভাবা হয়েছিল দরিদ্র মানুষের কথা? হঠাৎ পরিবহণ পুরো স্তব্ধ হয়ে গেলে, তাঁদের অনেকে যে ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়তে পারেন, সেই সম্ভাবনা সরকারের নজর এড়িয়ে গেল কী ভাবে? গত দু’তিন দিনে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও দিল্লি থেকে নিজেদের বাড়ি ফিরতে মরিয়া ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের বাসের সামনে ঠাসাঠাসি ভিড় আর রাস্তা ধরে শ’য়ে শ’য়ে কিলোমিটার হাঁটার মর্মান্তিক ছবি সামনে আসার পরে এই সমস্ত প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে বিরোধী দল এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি।

Advertisement

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের অভিযোগ, “এটা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে, লক-ডাউনের মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং কার্যকর করা হয়েছে মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে। কার্যত কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই। দুর্ভাগ্যজনক।” তাঁর মতে, কেন্দ্রের উচিত ছিল, হয় এর আগে কিংবা নিদেন পক্ষে একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের (বিশেষত দরিদ্রদের) মনোবল চিড় না-খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কোনও বড় মাপের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা। তার বদলে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যেটুকু করেছেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য বলে তাঁর দাবি।

কর্মী সংগঠন এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কউরের প্রশ্ন, “লকডাউনের এত বড় ঘোষণার অন্তত কয়েক দিন আগে জানানো যেত না? বিশেষ ট্রেন, বাসে করে ঘরে ফেরানো যেত না ভিন্ রাজ্যের কর্মীদের? তা না-করে এমন হঠাৎ সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের চরম বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়ার অর্থ কী?”

Advertisement

সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের অভিযোগ, “এই সমস্ত কর্মীদের অধিকাংশেরই দিন আনি-দিন খাই দশা। লক-ডাউন ঘোষণার পরে তাঁদের অধিকাংশকে বাড়ি ছাড়তে বলে দিয়েছেন বাড়ি-মালিকরাও। মাথায় ছাদ নেই। রোজগার বন্ধ। বাধ্য হয়ে দলে দলে বাড়ির পথ ধরতে বাধ্য হয়েছেন এঁরা।” তাঁর প্রশ্ন, যাতে প্রচুর সংখ্যক মানুষের মধ্যে এক বারে এই রোগ ছড়াতে শুরু না-করে, সেই জন্যই তো লক-ডাউন। অথচ ওই কর্মীরা এ ভাবে দলে-দলে রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হওয়ায় এখনও পর্যন্ত ২২ জন রাস্তায় দুর্ঘটনা কিংবা শারীরিক অসুস্থতায় মারা গিয়েছেন। আরও ২৭ জন হয়েছেন করোনার শিকার। তা হলে পরিকল্পনার অভাবে এ ভাবে আচমকা লক-ডাউনে সরকারের মূল লক্ষ্যই ব্যর্থ হয় না কি?

কর্মীদের দুর্দশা তুলে ধরে এ দিন কেন্দ্রের কাছে তাঁদের জন্য বেশ কয়েক দফা দাবি পেশ করেছে কংগ্রেস। আগামী তিন মাস ছোট-মাঝারি শিল্পের কর্মীদের অন্তত ৭০% মজুরির দায়িত্ব নেওয়া থেকে শুরু করে ছ’মাস চাকরি না-যাওয়ার নিরাপত্তা দেওয়ার মতো বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement