ফাইল চিত্র।
করোনার প্রথম ধাক্কায় কাজ হারিয়েছিলেন লাখ লাখ মানুষ। রোজগার কমেছিল আরও অনেকের। তখন অত্যাবশ্যক নয় এমন সমস্ত পণ্যের কেনাকাটি কমাতে থাকেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের বাজারকেও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আইটিসি-র বার্ষিক রিপোর্টে এমনই উদ্বেগের বার্তা উঠে এসেছে। এমনকি বলা হয়েছে, এ দফায় গ্রামের দিকে সংক্রমণ আগের তুলনায় বেশি হওয়ায় ধাক্কা খেতে পারে সেখানকার চাহিদাও। সব মিলিয়ে গোটা অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তাই হয়ে উঠতে পারে অমসৃণ।
গত বছর অতিমারির প্রথম ঢেউ সামাল দিতে অর্থনীতির দরজা একটা বড় সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিল কেন্দ্র। তার জেরে গত অর্থবর্ষের প্রথম দুই ত্রৈমাসিকে মন্দার কবলে পড়তে হয়েছিল দেশকে। গোটা বছরের হিসেবেও সঙ্কুচিত হয়েছিল অর্থনীতি। তবে কেন্দ্রের মন্ত্রী এবং আধিকারিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন মূল্যায়ণ সংস্থাও বলেছিল, সংক্রমণের ঝাঁঝ কমে আসতেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে জমে থাকা চাহিদার উপরে ভর করে গতি পেতে শুরু করেছিল বিক্রিবাটা। দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল অর্থনীতি। কিন্তু তার পরেই আছড়ে পড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এই প্রেক্ষিতেই আইটিসি-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, করোনার দাপট কমলেও এখন হাতে নগদ টাকা রাখতে চাইছেন সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্যের দিকে তাকিয়েই বাড়াচ্ছেন সঞ্চয়। কেনাকাটা করছেন কম। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের বাজারে। ফলে শহরাঞ্চলে পণ্যের চাহিদা বিপুল ভাবে মাথা তুলে যে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাবে, সেই সম্ভাবনা কম।
গত বছর অতিমারির সময়ে গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত কিছুটা হলেও পোক্ত ছিল। কিন্তু এ বারের পরিস্থিতি ততটা ইতিবাচক নয়। কারণ, এ দফায় সংক্রমণ আগের তুলনায় বেশি ছড়িয়েছে সেখানেও। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘করোনার প্রথম দফার তুলনায় দ্বিতীয় দফায় গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। যা শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর গতি কমাতে পারে।’’
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আগে সরবরাহ ব্যবস্থার সমস্যা থাকলেও এখন তা স্বাভাবিক। কিন্তু নতুন সমস্যা তৈরি করেছে কম সময়ের জন্য এবং কম সংখ্যায় দোকান খোলা। সেটাই জোর ধাক্কা দিয়েছে স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্য শিল্পকে।