—প্রতীকী চিত্র।
গত মাসে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৪.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। শিল্পমহলের আশা, পরের ঋণনীতিতেই সুদের হার কমাতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। সে ক্ষেত্রে কম সুদে ঋণ মিলবে। যা জ্বালানি জোগাবে ব্যবসায় এবং আর্থিক বৃদ্ধিতে। কিন্তু মঙ্গলবার শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্রের নেতৃত্বে জাতীয় অর্থনীতি সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে, তার অলিগলিতে অন্য রকম সুর। সেখানে বলা হয়েছে, চরম আবহাওয়া মূল্যবৃদ্ধির সামনে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে শীর্ষ ব্যাঙ্কও এমন সতর্ক পদক্ষেপ নিয়ে চললে অদূর ভবিষ্যতে সুদ কমার সম্ভাবনা কতটা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অবশ্য অন্যান্য প্রতিবেদনের মতো এ ক্ষেত্রেও জানিয়েছে, মতামত লেখকের নিজস্ব।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের মাপকাঠি অনুযায়ী খুচরো মূল্যবৃদ্ধির সহনসীমা ৬% হলেও, তাকে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাইছে তারা। সাম্প্রতিক অতীতে গভর্নর শক্তিকান্ত দাস একাধিক বার বলেছেন, খাদ্যপণ্য এবং জ্বালানি বাদে বাকি মূল্যবৃদ্ধির হার (কোর ইনফ্লেশন) কমলেও, খাবারদাবারের দামের অস্থিরতা সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধিকে দীর্ঘ সময়ের জন্য নিচুতে থাকতে দিচ্ছে না। তাই খাবারের দামকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। যেমন, গত বছর তাপপ্রবাহ এবং অনিয়মিত বর্ষার ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কৃষি উৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে। বাজারে সরবরাহের অভাবে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। এ বছর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, গ্রীষ্মে তাপমাত্রা নজিরবিহীন জায়গায় পৌঁছতে পারে। আবার বৃষ্টিও হতে পারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি (১০৬%)। অর্থাৎ, চরম আবহাওয়া বজায় থাকবে। এই প্রেক্ষিতেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন চরম আবহাওয়া মূল্যবৃদ্ধিকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে পারে। সঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার জেরে অশোধিত তেলের দামে অস্থিরতা তো আছেই। যার উত্থানের অর্থ ভারতের জ্বালানি আমদানির খরচ বৃদ্ধি এবং সেই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধিও। উল্লেখ্য, ইরান-ইজ়রায়েল অশান্তির ইঙ্গিতে দিন কয়েক আগে ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৯০ ডলার পার করেছিল। এ দিন অবশ্য তা খানিকটা নেমে ৮৬ ডলারের আশপাশে।
অর্থনীতির বিষয়ে অবশ্য আশাপ্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘আগের অনুমানের তুলনায় ভারতে জিডিপি বৃদ্ধি আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। পোক্ত বিনিয়োগ, ব্যবসার উন্নতি এবং চাহিদা বৃদ্ধিই মূল কারণ।’’