—প্রতীকী চিত্র।
প্রান্তিক এলাকায় যেখানে উপযুক্ত ব্যাঙ্কিং পরিকাঠামো নেই সেখানে সহজে ন্যূনতম আর্থিক পরিষেবা (এইপিএস) দিতে আধার ভিত্তিক লেনদেন ব্যবস্থা চালু করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু গ্রাহকের আঙুলের ছাপের মতো বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে প্রতারণা চক্র ক্রমশ জাল বিস্তার করায় তা এখন প্রশ্নের মুখে। পাশাপাশি সরকারি অনুদান না নিলেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে কার্যত জোর করে আধার তথ্য জোড়ায় (যা বাধ্যতামূলক নয়) গ্রাহকদের প্রতারণার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে বলে অভিযোগ ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মী ইউনিয়নের যৌথ নাগরিক সংগঠন ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চের। অবিলম্বে অ্যাকাউন্টে বাধ্যতামূলক ভাবে আধার জোড়া বন্ধের পাশাপাশি, এইপিএস ব্যবস্থায় রক্ষাকবচের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসকে চিঠি দিয়েছে তারা। ব্যাঙ্কিং মহলের একাংশের দাবি, ওই সংযুক্তির জন্য কেন্দ্রের তরফেও অলিখিত চাপ রয়েছে।
আধার কর্তৃপক্ষ ইউআইডিএআই ও ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশনের (এনপিসিআই) চালু করা এইপিএস-এ মূলত গ্রাহকের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন হয়। কিন্তু ছাপের নকল ব্যবহার করে সম্প্রতি ওই পরিষেবায় গ্রাহকের অজান্তে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সূত্রের খবর, প্রতারিত গ্রাহকদের অনেককেই সম্পত্তি নথিভুক্তিকরণের সময় আঙুলের ছাপ দিতে হয়েছিল। আবার বিভিন্ন গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রেও এইপিএস চালু রয়েছে। যদিও ঠিক কোথায় তা ঘটছে, তা তদন্তে স্পষ্ট নয়।
চিঠিতে সংগঠনের দাবি, বাধ্যতা -মূলক না হলেও ব্যাঙ্কে আধার জুড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। দ্রুত অ্যাকাউন্ট খুলতে বৈদ্যুতিন কেওয়াইসিতে লাগছে আঙুলের ছাপ। মঞ্চের আহ্বায়ক সৌম্য দত্ত ও বিশ্বরঞ্জন রায়ের বক্তব্য, আধার জুড়তে বাধ্য করা হচ্ছে বলেই গ্রাহকের টাকা লুটের সুযোগ পাচ্ছে প্রতারক। কিন্তু এই সংযুক্তি কি বাধ্যতামূলক? তাঁরা জানান, শুধুমাত্র যে অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি বা অনুদান জমা পড়ে বা বিদেশ থেকে টাকা আসে, সে ক্ষেত্রেই তা বাধ্যতামূলক। সব ক্ষেত্রে যে সংযুক্তি বাধ্যতামূলক নয় তা সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউআইডিএআই-ও স্পষ্ট জানিয়েছে।
সৌম্য বলেন, “ব্যাঙ্ক যতক্ষণ না গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে, ততক্ষণ বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে টাকা তোলার পরিষেবা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছি।“ মঞ্চের দাবি, জোর করে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার বা বায়োমেট্রিক তথ্য সংযোগের (বিশেষ করে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে) ফলে গ্রাহকেরা তাঁদের অজান্তেই এইপিএস পরিষেবার যোগ্য হয়ে যাচ্ছেন।