প্রতীকী ছবি।
ফের কয়লার দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করল কোল ইন্ডিয়া। এই দর বাড়ছে কাঁচামাল হিসেবে তা ব্যবহারকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং অন্যান্য শিল্পের জন্য। ফলে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সর্বত্র বিদ্যুতের মাসুল বাড়ার সম্ভাবনা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর দরুন ইউনিট পিছু বিদ্যুতের মাসুল বাড়তে পারে ৫০ পয়সা পর্যন্ত।
কোল ইন্ডিয়া বিএসই-কে জানিয়েছে, ৯ জানুয়ারি থেকে কয়লার দাম বৃদ্ধির দৌলতে এই অর্থবর্ষের বাকি সময়ে তাদের ভাঁড়ারে আসবে বাড়তি ১,৯৫৬ কোটি টাকা। যা এ দিন ঠেলে তুলেছে সংস্থার শেয়ার দরকে। কিন্তু তেমনই এই সিদ্ধান্তের দৌলতেই ইউনিট পিছু বিদ্যুতের মাসুল ৩০ থেকে ৫০ পয়সা পর্যন্ত বাড়বে বলে পিটিআইকে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টিভ পাওয়ার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইসিপিপিএ)।
মহারত্ন সংস্থাটির কর্ণধার গোপাল সিংহ বলেন, গড়ে কয়লার দাম বাড়বে ৮.৫%। আরও বেশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পথ প্রশস্ত করা, পরিবেশ বান্ধব খনন ইত্যাদি মাথায় রেখেই দর বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত।
কয়লার দাম বাড়লে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাড়বে দেশের প্রায় সমস্ত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেরই। সে ক্ষেত্রে সম্ভবত বণ্টন সংস্থাগুলি বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হবে। গ্রাহকদের ঘাড়ে চাপবে বাড়তি বিলের বোঝা।
অনেকের মতে, এই সিদ্ধান্তে বেশি মুশকিলে পড়বে রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের নিজস্ব খনিগুলি থেকে এখন কয়লা তোলা বন্ধ। যে কারণে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি চালাতে কোল ইন্ডিয়ার কয়লাতেই প্রায় পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে নিগমকে। এখন কোল ইন্ডিয়া দাম বাড়ানোয় নিগমের কয়লা কেনার খরচ আরও বাড়বে। তার জেরে বিদ্যুতের দামও চড়বে বলে রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তাদের ধারণা।
আবার নিগমের বিদ্যুতের দাম বাড়লে, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাও তাদের বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হবে। তাল মিলিয়ে বাড়ার সম্ভাবনা অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার বিদ্যুতের দামও। দাম বাড়ানোয় কোল ইন্ডিয়ার পর্ষদ সবুজ সঙ্কেত দেওয়ায় আইসিপিপিএ মনে করছে, ১৫-২০ শতাংশ হারে জি-১১ ও জি-১৪ কয়লার দাম বাড়বে। বিভিন্ন সূত্রের খবর, জি-৭ ও জি-৮ মানের কয়লার দাম তুলনায় বেশি বাড়ছে। ফলে জোরালো হচ্ছে ইউনিটে ৫০ পয়সা পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বাড়ার জল্পনা।
কোল ইন্ডিয়ার সহযোগী প্রতিটি সংস্থাও কয়লার দাম বাড়াচ্ছে। এর আগে মে মাসে কোল ইন্ডিয়া তাদের কয়লার দাম গড়ে ৬.৩% বাড়িয়েছিল। ডিসেম্বরে কয়লা পাঠানোর উপরে লেভিও বসেছে।
বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি অবশ্য এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। তাদের অভিযোগ, বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতার দরুন যেখানে জ্বালানির দাম কমছে, সেখানে কোল ইন্ডিয়া দাম বাড়ানোয় ওই সংস্থার পরিচালন ব্যবস্থাকেই দায়ী করছে তারা। এর প্রভাব পড়বে ইস্পাত, সিমেন্ট ইত্যাদি শিল্পেও।
কালো মানিক
•
মে মাসেই গড়ে ৬.৩% দাম বাড়িয়েছিল কোল ইন্ডিয়া। যার দৌলতে তাদের ভাঁড়ারে এসেছে বাড়তি ৩,২৩৪ কোটি টাকা
•
ডিসেম্বরের গোড়ায় ফের প্রতি টন কয়লা সরবরাহে ৫০ টাকা লেভি (ইভ্যাকুয়েশন চার্জ) বসায় তারা
•
তার পরে এ বার ৯ জানুয়ারি থেকেই ফের দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত। দর বাড়বে গড়ে ৮.৫%। আর তা থেকে চলতি অর্থবর্ষে সংস্থার ঘরে বাড়তি আসবে ১,৯৫৬ কোটি
•
আগামী আর্থিক বছর থেকে দর নির্ধারণ শুরু হওয়ার কথা কয়লার জ্বলন ক্ষমতার উপর ভিত্তি করেও
মাসুল ঝটকা
•
বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের বড় অংশের দাবি, মাসুল বাড়বে ৩০ থেকে ৫০ পয়সা