অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে ধারাবাহিক ভাবে বিক্রি কমায় রোজকার জীবনে প্রয়োজনীয় নানা ধরনের স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্য তৈরির (যেমন চা, কফি, কেক, বিস্কুট, তেল, সাবান, শ্যাম্পু ইত্যাদি) সংস্থাগুলি বেশ কিছু দিন ধরেই বিপাকে। এর কারণ, মূল্যবৃদ্ধি। বহু মানুষের আয় বেড়ে যাওয়া খরচের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না। ফলে চলছে কেনাকাটায় কাঁটছাঁট। চাহিদায় তৈরি হচ্ছে খরা। ধাক্কা খাচ্ছে ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির লাভও। পরিসংখ্যান বলছে, গত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থবর্ষের দু’টি ত্রৈমাসিকে ক্ষতির অঙ্ক বেড়েছে একাধিক সংস্থার। অক্টোবর-ডিসেম্বর নিয়েও তেমন প্রত্যাশার জায়গা নেই তারা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই পরিস্থিতি বদলাতে এখন বাজেটই ভরসা। আশা, অন্তত এ বার কেন্দ্র নিশ্চয়ই এমন পদক্ষেপ করবে, যাতে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা বাড়তি টাকা থাকে এবং এই ধরনের নিত্য ব্যবহারের পণ্যের চাহিদা বাড়ে।
জয় পার্সোনাল কেয়ারের চেয়ারম্যান সুনীল আগরওয়ালের মতে, মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার সমস্যা সরকারের সামনে তুলে ধরেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘দেশের শহরাঞ্চলের মধ্যবিত্তেরা মূল্যবৃদ্ধির চাপে নাজেহাল। তাই বাজেটে দাম কমার বিষয়টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি করছাড় বাড়িয়ে তাঁদের সুরাহা দিতে হবে। একমাত্র তা হলেই ধুঁকতে থাকা ভোগ্যপণ্য শিল্প কিছুটা প্রাণ ফিরে পাবে।’’ সুনীল জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের শেষে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। কিন্তু তা ধরে রাখতে গ্রামীণ চাহিদাকে আরও কয়েক গুণ বাড়ানো দরকার। একই আশায় অপেক্ষা করে বসে গোদরেজ কনজিউমার্সের সিএফও আসিফ মালবারিও। তিনি মনে করেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলের মানুষের হাতে যথেষ্ট টাকাপয়সা থাকবে, এমন একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বাজেটে। তাতেই দেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়বে।’’ পরিকাঠামোয় বরাদ্দ বাড়ানোরও পক্ষপাতী তিনি। কারণ, তাতে কর্মসংস্থান হলে একাংশের ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে যাবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গবেষণা সংস্থা কান্টার সমীক্ষা বলেছিল, স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যগুলি কিনতে খরচ কমিয়েছেন দেশবাসীর বড় অংশ। এমনকি ২০২৫ সালেও হয়তো বিক্রি আশাপ্রদ হবে না। এই পূর্বাভাসে সংশ্লিষ্ট মহল সন্ত্রস্ত। ভোল্টাজ়-এর এমডি প্রদীপ বক্সীর আর্জি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই বাজার চাঙ্গা হবে না। বাজেটে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ চাই। না হলে সমস্যা বাড়বে।’’ পার্লে প্রোডাক্টস-এর ভিপি ময়াঙ্ক শাহ আবার বলছেন, ‘‘গ্রামীণ কর্মসংস্থানে আলাদা করে জোর দিতে হবে। তা না হলে চাহিদা বাড়বে না। কৃষিতে বড় আর্থিক সহায়তা গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হতে পারে।’’