প্রতীকী চিত্র।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশের আর্থিক কর্মকাণ্ডকে নতুন করে ধাক্কা দিয়েছে। নানা মহলের বক্তব্য, চাহিদা বাড়ানোর পাশাপাশি মানুষের কাছে কত দ্রুত প্রতিষেধক পৌঁছনো যায় তার উপরেই নির্ভর করছে আগামী দিনের বৃদ্ধির ছবি। একই মত বণিকসভা সিআইআই-এরও। তাদের নতুন প্রেসিডেন্ট টি ভি নরেন্দ্রনের বক্তব্য, এ দফায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প আনুক কেন্দ্র। প্রতিষেধক বণ্টনে গতি আনতে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হোক এক জন মন্ত্রীকে। শিল্পের জন্যও কর ছাড়-সহ নানা প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
অতিমারির প্রথম ঢেউ মাথা নামানোর পরে উৎপাদন ও বিক্রিবাটার কাঁধে ভর করে নতুন করে বৃদ্ধির গণ্ডিতে পা রেখেছিল অর্থনীতি। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ পরিস্থিতিকে অনেকটাই এলোমেলো করে দিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মাসিক প্রতিবেদনও বলছে, সংক্রমণের জেরে এপ্রিল-মে মাসে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার উৎপাদন ঘাটতি হয়েছে। ধাক্কা খেয়েছে বিশেষ করে ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চলের চাহিদা। এই পরিস্থিতিতে বণিকসভাটির দায়িত্ব নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে শীর্ষ ব্যাঙ্ক-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সুরেই নরেন্দ্রন জানান, দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ এপ্রিল-জুনের আর্থিক কর্মকাণ্ড ও কর্মসংস্থানে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে। কর্মীরা সংক্রমিত হয়েছেন। বেড়েছে চিকিৎসার খরচ। ফলে অন্যান্য খাতের চাহিদা কমেছে।
অর্থনীতির চাকা ঘোরার ব্যাপারে সিআইআই আশাবাদী। তবু তাতে গতি আনতে সরকারের তরফে আর্থিক ত্রাণ, ঋণ ও করছাড়ের সুবিধা দেওয়া উচিত বলে মনে করছে তারা। গুরুত্ব দিচ্ছে প্রতিষেধকে। নরেন্দ্রনের দাবি, ৩ লক্ষ কোটির ত্রাণ দেওয়ার সামর্থ্য কেন্দ্রের রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার উদ্বৃত্ত সম্পদ কাজে লাগানো যেতে পারে। দরকারে টাকা ছাপিয়ে নগদের জোগান বাড়াতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। আর শিল্পের জন্য দেওয়া হোক ঋণের সুবিধা, তার মেয়াদ বৃদ্ধি, ছোট-মাঝারি ব্যবসার পাওনা মেটানো।
বিশেষজ্ঞ মহল হলছে, করোনার তৃতীয় ঢেউ কতটা আটকানো যাবে তা নির্ভর করছে প্রতিষেধক প্রয়োগের গতির উপরে। বণিকসভাটির সুপারিশ, প্রতিষেধক উৎপাদন ও বণ্টন দ্রুত কার্যকর করতে আলাদা এক জন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।