হাসি ফিরল চিনের ব্রোকারদের মুখে। ছবি: এএপি
সরকারি হস্তক্ষেপ বৃহস্পতিবার টেনে তুলল চিনের শেয়ার বাজারকে। আর তার হাত ধরেই পতনের খরা কাটিয়ে উঠে দাঁড়াল এশিয়া ও ইউরোপের বাজার। তবে ভারতের বাজার ছিল তুলনায় সাবধানী। ফলে সকালের দিকে লগ্নিকারীদের শেয়ার কেনার আগ্রহে সেনসেক্স বাড়ার মুখ নিলেও দিনের শেষে তা পড়ে যায় ১১৪ পয়েন্টের বেশি। দাঁড়ায় ২৭,৫৭৩.৬৬ পয়েন্টে, যা গত তিন সপ্তাহে সবচেয়ে কম। তবে এ দিন ডলারে টাকার দাম বেড়েছে ২১ পয়সা, যার জেরে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৩.৩৯ টাকা।
বুধবারের ধসের পরে শেয়ার সূচককে টেনে তুলতে মরিয়া চিনা সরকার এ দিন বাজার নিয়ন্ত্রক মারফত হস্তক্ষেপ করে। বাজারে নথিভুক্ত সমস্ত সংস্থায় যে-সব শেয়ারহোল্ডারের বড় অঙ্কের অংশীদারি রয়েছে, তাদের শেয়ার বিক্রি নিষিদ্ধ করে দেয় চিনা নিয়ন্ত্রক। পাশাপাশি, ব্যাঙ্কিং শিল্পের নিয়ন্ত্রকও জানিয়েছে, যে-সব ঋণের সাপেক্ষে শেয়ার মালিকানা রয়েছে, সেগুলির মেয়াদ বাড়ানো হবে। এর প্রভাবে সাংহাই ও সেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রথম সারির নথিবদ্ধ সংস্থাগুলির সূচক সিএসআই-৩০০ বেড়ে যায় ৬.৪ শতাংশ। সাংহাই কমেপোজিট ইনডেক্স বেড়েছে ৫.৮ শতাংশ, যা গত ছ’বছরে শতাংশের হিসেবে দৈনিক সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। শেয়ার বাজার সূত্রের খবর, এর জেরে বুধবারের লোকসানের প্রায় পুরোটাই মুছে ফেলতে পেরেছে চিনা বাজার। কিন্তু যেহেতু কৃত্রিম ভাবে বাজারকে ধরে রাখা হয়েছে, সেই কারণে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তা শীঘ্রই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে, যা বিশ্ব বাজারের স্থিতি টলিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। তাঁদের মতে গ্রিস সঙ্কটের চেয়েও বিশ্ব বাজারের সামনে এটি বড় সমস্যা।
বরং গ্রিসের সঙ্কট রবিবারের মধ্যে কেটে যাওয়ার আশায় এ দিন ইউরোপের বাজার বেড়েছে। চিনের পাশাপাশি চাঙ্গা ছিল এশীয় বাজার। হংকঙের হ্যাং সেং বেড়েছে ৩.৭৩ শতাংশ, জাপানের নিক্কেই ০.৬ শতাংশ। খোলার পরে বেড়েছে আমেরিকার প্রধান প্রধান সূচক।
এ দিন সেনসেক্স সারা দিনে ওঠা-নামা করেছে ২৫০ পয়েন্টেরও বেশি। টিসিএসের ফলাফল ভাল হলেও বাজারে দুশ্চিন্তা রয়েছে অন্যান্য আর্থিক ফলাফল নিয়ে। তবে গ্রিস ও চিন নিয়ে উদ্বেগ এখনও পুরোপুরি না-কাটায় বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি টানা শেয়ার বিক্রি করে চলেছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, ওই সব সংস্থা গত বুধবার ভারতের বাজারে ৩৫৪.৩২ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।