বাজারে জোগানের উপর নির্ভর করে শাক-সব্জি ও শস্যের দামের ওঠা-পড়ার উপর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাত নেই। শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ে বলেছেন, এই মূল্যবৃদ্ধির হারে রাশ টানা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে এই সঙ্গেই সাবধানী রাজন জানিয়ে দেন, বেতনের উপর এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে।
আরবিআই কর্তা বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়ে বলেন, খাদ্যপণ্যের চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে বেতন লাগামছাড়া বাড়লে তা বাড়তি চাহিদা তৈরি করে ওই সব সামগ্রীর দাম আরও বেশি বাড়িয়ে দেবে। সেটাই আবার বেতন বাড়ার প্রবণতা তৈরি করলেও তা পরিণামে আরও ঠেলে তুলবে খাদ্যের দামকে। এ ভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পিছনে বেতন বৃদ্ধি দৌড়লেও অর্থনীতির পক্ষে তা অশনি সঙ্কেতেরই সূচনা করবে বলে আশঙ্কা রাজনের। এই দুষ্টচক্র ঠেকানোর উপরই জোর দিয়েছেন রাজন। দফায় দফায় দাম বাড়া ঠেকিয়েই মূল্যবৃদ্ধির সরীসৃপকে বাগে রাখতে চান তিনি।
প্রসঙ্গত, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছুঁয়েছে ৬.৭৯ শতাংশ, জানুয়ারিতে তা ছিল ৬.০৬ শতাংশ। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারতে গড়ে খাদ্য সামগ্রীর দাম বেড়েছে ৯.৮৮ শতাংশ হারে। ২০১৩ সালের নভেম্বরে তা সব নজির ভেঙে পৌঁছয় ১৪.৭২ শতাংশে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ফের খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মাথা চাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা রুখতে চান রাজন।
গোখলে ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্স অ্যান্ড ইকনমিক্স-এ রাজন সম্প্রতি বলেন, ‘‘কিছু চাহিদা তুলনায় সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু খাদ্য সেই তালিকায় পড়ে না। তা রুচির উপর নির্ভর করে।’’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে আরবিআই ২০১৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। আর, ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ৪ শতাংশ, অবশ্য তার ২ শতাংশ উপরে বা নীচে থাকতে পারে মূল্যবৃদ্ধি। সেই কারণে রাজন বলেছেন, ‘‘আজ যদি আমরা দাম বাড়তে দিই, সে ক্ষেত্রে পরে বর্ষা ভাল না-হলে তা আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে।’’
হুঁশিয়ারি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। মানুষকে সতর্ক করে দিয়ে আরবিআই বলেছে, ‘‘ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, গ্রাহকদের তা জানার জন্য আরবিআই কোনও মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেনি, যদিও এ ব্যাপারে বেশ কিছু গ্রাহক এসএমএস পেয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। আরবিআইয়ের লোগো ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যক্তি এ ব্যাপারে দাবি করছে বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানতে পেরেছে। তাতে লেখা আছে ‘অল ব্যাঙ্ক এনকোয়্যারি নাম্বার’, যার আসলে কোনও অস্তিত্ব নেই।