গত কয়েক দিনে রোজ কয়েক পয়সা করে কমছে তেলের দাম। কিন্তু এখনও তা যে উচ্চতায়, তাতে ক্ষোভ একচুলও কমেনি সাধারণ মানুষের। ট্রাক থেকে ট্যাক্সি— চিন্তিত পরিবহণও। আর এই পরিস্থিতিতেও প্রায় রোজ নিয়ম করে সেই দীর্ঘ মেয়াদি সমাধানের আশ্বাসই দিয়ে চলেছে কেন্দ্র। অথচ বাস্তব হল, সুদূর ভবিষ্যতেও তেল আমদানির উপরেই নির্ভর করতে হবে ভারতকে। অন্তত এখনও পর্যন্ত তা কমানোর কোনও নীল নকশা তৈরি করতে পারেনি মোদী সরকার।
সরকারি সূত্রের খবর, দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান খুঁজতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় শীঘ্রই জাতীয় জ্বালানি নীতি নিয়ে কথা হবে। কিন্তু সমস্যা হল, সেখানেও অশোধিত তেল আমদানির উপরে নির্ভরতা কমার দিশা নেই। উল্টে ইঙ্গিত, তা বৃদ্ধির। তার সঙ্গে ডলারেরও দাম বাড়লে তো পোয়াবারো। সে ক্ষেত্রে আমদানির খরচ বাড়বে লাফিয়ে।
নীতি আয়োগের তৈরি জ্বালানি নীতির চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, কয়লা, তেল, গ্যাস ইত্যাদি জ্বালানির প্রাথমিক উৎসগুলির ৩৩% আমদানি করতে হয়। ২০৪০ সালে তা বেড়ে ৫৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তলমিজ অহমেদ বলেন, ‘‘এর মানে, এখন প্রায় ৮১% অশোধিত তেল আমদানি করতে হয়। ২০৪০-এ তা ৯০ শতাংশে পৌঁছবে। তা হলে আর নীতি তৈরি করে লাভ কী?’’
খসড়া নীতিতে তেলের চাহিদা কমানোর দু’টি রাস্তাই দেখানো হয়েছে। এক, গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে গণ পরিবহণে জোর। দুই, রেলের পরিকাঠামো বাড়ানো। প্রাক্তন তেল সচিব এস সি ত্রিপাঠির মতে, ‘‘সৌদি আরব, ইরান, রাশিয়া, আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকবে হবে। অশোধিত তেলের দাম এই হারে থাকলে, আমদানি খরচও বাড়বে।’’
এ দিকে, ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চ জানিয়েছে, যদি তিন মাসের বেশি সময় ধরে অশোধিত তেলের দাম গড়ে ৬৮-৭২ ডলার থাকে এবং ডলারের দর ৬৬ থেকে ৬৭ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে, তা হলে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতি মাথাব্যথা হতে পারে কেন্দ্রের।