প্রতীকী ছবি।
গম, সর্ষে-সহ ছ’টি রবিশস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) বাড়ানোর কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র। মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটি এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যেই সরকার চাষিদের থেকে শস্য সংগ্রহ করে। তবে ওয়াকিবহাল মহলের বিশ্লেষণ, দেশের খুচরো বাজারে এখন মূল্যবৃদ্ধির যা হার, এ দিনের দাম বৃদ্ধি তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এমএসপি আরও বাড়ানো হলে তা উল্টে মূল্যবৃদ্ধিকে বাড়তি ইন্ধন জোগাতে পারে। সে কারণেই কেন্দ্র তা আরও বাড়ানোর ঝুঁকি নিতে পারল না বলে মনে করছে তারা।
রবি (শীত) এবং খরিফ (গ্রীষ্ম) মরসুমের মোট ২৩টি ফসলের এমএসপি ঠিক করে কেন্দ্র। এ দিন তারা জানিয়েছে, ২০২২-২৩ কৃষিবর্ষ (জুলাই-জুন) এবং ২০২৩-২৪ বিপণনবর্ষের (এপ্রিল-মার্চ) জন্য গম, সর্ষে, মুসুর, বার্লি, চানা-সহ ছ’ধরনের রবিশস্যের এমএসপি ঘোষণা করা হয়েছে। বলেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী, ফসলের উৎপাদন খরচের চেয়ে অন্তত ৫০% বেশি দাম চাষিদের দেওয়ার বিষয়টি এ বার নিশ্চিত করা হল। কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, কুইন্টালে গম উৎপাদনের খরচ এখন ১০৬৫ টাকা। এমএসপি ১১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১২৫ টাকা। অর্থাৎ, উৎপাদন খরচের প্রায় ১০০% বেশি। অন্যান্য শস্যের ক্ষেত্রে তা ৫০%-৮৫%।
তবে বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, সেপ্টেম্বরের শেষে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৪১%। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি আরও বেশি। এই অবস্থায় সেই হারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এমএসপি বাড়ানোর ঝুঁকি নিতে পারেনি কেন্দ্র। কারণ, এমএসপি আরও বাড়লে মূল্যবৃদ্ধি আরও মাথা তুলতে পারে। একমাত্র মুসুরের ক্ষেত্রে এমএসপি ৯% বেড়েছে। রেপসিড ও সর্ষেতে বেড়েছে ৭.৯২%। বাকি সমস্ত শস্যে আরও কম। গমের ক্ষেত্রে ৫.৪৫% এবং চানায় ১.৯১%।
অনুরাগ অবশ্য মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধি এখন সারা বিশ্বের সমস্যা। এমন সমস্ত দেশে তা মাথা তুলছে যেখানে কার্যত মূল্যবৃদ্ধিই ছিল না। ভারত জিনিসপত্রের দামকে অপেক্ষাকৃত বেশি নাগালের মধ্যে রাখতে পেরেছে।