—ফাইল চিত্র।
সরকারি দফতর ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিভিন্ন ভূ-সম্পদকে কাজে লাগিয়ে (মনিটাইজ়েশন) আগামী চার বছরে রাজকোষে ৬ লক্ষ কোটি টাকা আনার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। এই কর্মসূচির জন্য বিশেষ একটি সংস্থা তৈরির পরামর্শ দিয়েছিল নীতি আয়োগ। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই সংস্থা (স্পেশাল পারপাস ভেহিক্যাল) গঠনের প্রস্তাবে সম্মতি দিল মোদী সরকার।
আগামী কয়েক বছরে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে খরচ বিপুল ভাবে বাড়াতে চাইছে কেন্দ্র। তার জন্য রাজকোষকে শক্তিশালী করা দরকার। আর সেই উদ্দেশ্যে জোর দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি এবং বিলগ্নিকরণের দিকে। কিন্তু করোনার উপর্যুপরি ঢেউ হোক কিংবা হোক অপ্রত্যাশিত ভাবে হাজির হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এই সবই সরকারি কর্মসূচির রাস্তাকে অমসৃণ করে তুলছে। ফলে কমছে কর আদায় এবং বিলগ্নিকরণ কর্মসূচিতে গতি বৃদ্ধির প্রত্যাশা। যেমন, পরিকল্পনা থাকলেও জীবন বিমা নিগমের প্রথম শেয়ার (আইপিও) চলতি অর্থবর্ষেই বাজারে আনা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং একটি সাধারণ বিমা সংস্থা বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা থাকলেও, তা কবে হবে তার ঠিক নেই। এই পরিস্থিতিতে রোজগারের আরও রাস্তা খুলতে চাইছে কেন্দ্র। তার অংশ হিসেবেই এ দিন ন্যাশনাল ল্যান্ড মনিটাইজ়েশন কর্পোরেশন (এনএলএমসি) তৈরির প্রস্তাবে সায় দিল তারা। প্রাথমিক পরিকল্পনা, যে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিক্রি করা হবে কিংবা বন্ধ করে দেওয়া হবে তাদের উদ্বৃত্ত জমি ও ভবনগুলিকে সংস্থা থেকে পৃথক করে এনএলএমসির অধীনে নিয়ে আসা। তার পরে সেগুলি ভাড়া বা লিজ় দিয়ে কেন্দ্রের আয় বাড়ানো। সরকারি দফতর এবং সংস্থাকে মূল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয় এমন উদ্বৃত্ত সম্পদ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করবে তারা।
এ দিন এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অর্থ দফতরের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা হিসেবেই গড়ে তোলা হবে এনএলএমসিকে। যার প্রাথমিক অনুমোদিত শেয়ার মূলধন হবে ৫০০০ কোটি টাকা। পেড-আপ শেয়ার মূলধন ১৫০ কোটি টাকা। কেন্দ্রের অবশ্য বক্তব্য, একে শুধু সরকারের রোজগার বাড়ানোর প্রক্রিয়া হিসেবে দেখলে চলবে না। এর মাধ্যমে অর্থনীতির চাকাতেও গতি আসবে। উৎসাহিত হবে বেসরকারি লগ্নি, আর্থিক কর্মকাণ্ড এবং স্থানীয় অর্থনীতি। সংস্থাগুলির বিক্রি কিংবা বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়াতেও গতি আসবে। সরকারি দফতর এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জমি-বাড়ি কী ভাবে এনএলএমসিকে হস্তান্তর করা হবে সে ব্যাপারে অবশ্য এ দিনের বিবৃতিতে কিছু খোলসা করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে যোগ্য পেশাদারদের নেওয়া হবে সংস্থাটিতে। প্রকল্পভিত্তিক ভাবে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে তাঁদের। এই পেশাদারদের নিয়োগের এবং বেতন ঠিক করার স্বাধীনতা থাকবে এনএলএমসির পর্ষদের হাতে।