৮০ হাজার কোটি ব্যাঙ্ককে জোগাতে সায় চাইল কেন্দ্র

চলতি ও আগামী অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে মোট ২.১১ কোটি টাকার নতুন শেয়ার মূলধন জোগানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫০
Share:

আপাতত ৮০ হাজার কোটি টাকা বাড়তি খরচের জন্য (যা বাজেটে ধরা ছিল না) সংসদে সায় চাইল অর্থ মন্ত্রক। ঋণপত্র (বন্ড) মারফত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে শেয়ার মূলধন জোগাতে যা ব্যবহার করবে তারা। তবে মোদী সরকারের দাবি, আসলে নিট হিসেবে এই অর্থ রাজকোষ থেকে বাড়তি খরচ হচ্ছে না। কারণ, ব্যাঙ্কগুলির হাতে বন্ড পৌঁছনোর পরে এই টাকা ফিরে আসবে কেন্দ্রের ঘরে।

Advertisement

চলতি ও আগামী অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে মোট ২.১১ কোটি টাকার নতুন শেয়ার মূলধন জোগানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। জানিয়েছে, এর মধ্যে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি আসবে বন্ড ছেড়ে। আর ৭৬ হাজার কোটি বাজেট বরাদ্দ। ওই ৭৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৫৮ হাজার কোটিই আবার আসবে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শেয়ার বেচে। বাকি ১৮ হাজার কোটি জোগাবে কেন্দ্র।

অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় ধুঁকতে থাকা ব্যাঙ্ককে সুরাহা, ছোট-মাঝারি সংস্থাকে সহজে ঋণ দিতে মূলধনের বন্দোবস্ত এবং বাসেল-৩ বিধি মানা। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছিল, মূলত এই তিন লক্ষ্যেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে শেয়ার মূলধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। যার একটা বড় অংশ আসবে ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার বন্ড থেকে। তারই অঙ্গ হিসেবে ৮০ হাজার কোটি বাড়তি খরচের জন্য সংসদে এই সায় চাওয়া।

Advertisement

ব্যাঙ্কের আমানতের একটি অংশ (স্ট্যাটুটরি লিকুইডিটি রেশিও বা এসএলআর) বাধ্যতামূলক ভাবে লগ্নি করতে হয় বিভিন্ন সরকারি ঋণপত্রে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই বন্ডে লগ্নিকে সেই আওতায় রাখা হবে না।

তবে কেন্দ্র শেয়ার মূলধন জুগিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হাল ফেরানোর কথা বললেও, এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে খটকা রয়েছে যথেষ্ট। অনেকের প্রশ্ন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতার যা অবস্থা, তাতে বাজারে তাদের বন্ড কেনার আগ্রহ আদৌ থাকবে কতখানি? তখন শেষমেশ ঘুরপথে কেন্দ্রকেই তার জন্য কড়ি জোগাতে হবে না তো? সে ক্ষেত্রে রাজকোষ ঘাটতি মাত্রাছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা।

তা ছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু জলের মতো টাকা ঢেলে লাভ হবে না। বরং দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাঙ্কিংয়ে সমস্যা মেটাতে হাঁটতে হবে সংস্কারের পথে। নিশ্চিত করতে হবে ঋণ খেলাপ যাতে আর মাত্রাছাড়া না হয়, সেই বিষয়টিও। এর জন্য জরুরি পরিচালন ব্যবস্থার সংস্কার। নইলে ফের সেই অলাভজনক প্রকল্পেই ঋণ দেওয়া হবে। আবারও মাথাচাড়া দেবে ঋণ খেলাপের সমস্যা।

ব্যাঙ্কিং শিল্পের অনেকের মতে, অনুৎপাদক সম্পদ তৈরির অন্যতম কারণ পছন্দের শিল্পপতিদের ঋণ পাইয়ে দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি। তাই আগে এই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধে কড়া হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement