চন্দা কোছর।
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ১,৮৭৫ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুরি সংক্রান্ত প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাঙ্কটির বরখাস্ত সিইও চন্দা কোছর, স্বামী দীপক কোছর ও ভিডিয়োকন কর্তা বেণুগোপাল ধুতের নামে মামলা করেছিল সিবিআই। সরকারি সূত্রের খবর, এ বার আর এক কদম এগিয়ে ওই তিন জনের নামে লুক আউট নোটিস জারি করেছে তারা। যাতে কেউই বিদেশে চলে যেতে না পারেন। তেমন চেষ্টা হলে যাতে চন্দা, দীপক, ধুতকে তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দিতে পারেন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ।
লুক আউট নোটিস জারি থাকা সত্ত্বেও গত ২০১৬ সালে বিজয় মাল্যের দেশ ছেড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিস্তর জল ঘোলা হয়েছিল। দেশের ব্যাঙ্কগুলিতে বিপুল পরিমাণ ঋণ বাকি ফেলে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বসে যাওয়া বিমান সংস্থা কিংফিশারের এয়ারলাইন্সের এই কর্ণধার। মোদী সরকারের মদতে ওই নোটিসের গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার কারণেই তা সম্ভব হয়েছিল বলে তোপ দাগেন বিরোধীরা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে ভিডিয়োকন ঋণ কাণ্ডে আর তেমন কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় মোদী সরকার। অনেকেই বলছেন, যাতে তাদের দিকে আঙুল উঠতে না পারে, সেই কারণেই তড়িঘড়ি এফআইআর। এমনকি এই লুক আউটের নোটিসও।
সূত্রের দাবি, চন্দা, দীপক ও ধুতের নামে এফআইআর করার প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই লুক আউট নোটিস জারি করেছে সিবিআই। তবে একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, চন্দার বক্তব্য নথিভুক্ত করার জন্য তাঁকে এখনও পর্যন্ত কোনও সমন পাঠানো হয়নি।
আরও পড়ুন: জিএসটির নয়া নিয়মে দামি হবে সস্তা ফ্ল্যাটই, অরুণ জেটলিকে চিঠি অমিত মিত্রের
ঋণ কাণ্ড
• চন্দার স্বামী দীপক কোছর ও ভিডিয়োকন কর্তা বেণুগোপাল ধুত গড়লেন নিউ পাওয়ার রিনিউয়েবল্স।
• আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ঋণ মঞ্জুর ধুতকে।
• সুপ্রিম এনার্জি মারফত নিউ পাওয়ারে লগ্নি ধুতের। সুপ্রিমের মালিকানা দীপকের নেতৃত্বাধীন ট্রাস্টের।
• ভিডিয়োকনকে ফের ঋণ।
• ধারের ৮৬% পরিণত অনুৎপাদক সম্পদে।
• চন্দার বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাত ও স্বজনপোষণের অভিযোগ। শুরু তদন্ত।
• পদত্যাগ চন্দার।
• চন্দা, দীপক, ধুতের বিরুদ্ধে মামলা সিবিআইয়ের।
• চন্দা , দীপক, ধুতের নামে লুকআউট নোটিস।
নোটিস-কথা
• বারবার সমন জারি সত্ত্বেও ফৌজদারি অভিযুক্ত তদন্তকারীদের সামনে না এলে, তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি হয়।
• দেশের সব বিমানবন্দর, বন্দর, অভিবাসন দফতরে তাঁর পাসপোর্ট-সহ তথ্য পাঠানো হয়। যাতে তিনি পালাতে না পারেন।
গোড়ায় আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের দাবি ছিল, একা চন্দা নন। ঋণ মঞ্জুর করেছিল সংশ্লিষ্ট কমিটি। সিবিআইয়ের অভিযোগ, কমিটি ভিডিয়োকন গোষ্ঠীর দু’টি সংস্থা ভিডিয়োকন ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স ও ভিডিয়োকন ইন্ডাস্ট্রিজকে যথাক্রমে ৩০০ কোটি ও ৭৫০ কোটি ঋণ মঞ্জুরির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাতে ভাঙা হয়েছিল ব্যাঙ্কের নীতি। যে ঋণের বেশির ভাগই পরে অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হয়। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ককে গুনতে হয় ১,৭৩০ কোটি টাকার লোকসান।
আরও পড়ুন: পেনশন প্রকল্পে আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন