Bitcoin

বিটকয়েনে বিপুল বিনিয়োগ ও লেনদেনের সিদ্ধান্ত ইলন মাস্কের, লাফিয়ে বাড়ল দাম

জানুয়ারি মাসে গোড়ার দিকে যেখানে একটি বিটকয়েনের দাম ৪০ হাজার মার্কিন ডলার ছিল, মঙ্গলবার তা পৌঁছে যায় ৪৮ হাজারের সর্বকালীন উচ্চতায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৫৪
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

ইলন মাস্কের দুই সিদ্ধান্তে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গেল বিটকয়েন। পেরিয়ে গেল ৪৮ হাজার মার্কিন ডলারের অঙ্ক। জানুয়ারি মাসে বিটকয়েনে বিনিয়োগ করার পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার। তার উপর সম্প্রতি ক্রেতাদের কাছ থেকে বিটকয়েনে দাম মেটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাস্কের ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা টেসলা। তাতে আরও গতি পেয়েছে বিটকয়েন।

Advertisement

জানুয়ারি মাসেই বিটকয়েনে বিনিয়োগের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টেসলা। সেই অনুযায়ী বিনিয়োগ হয়েছিল ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে সেই সিদ্ধান্ত এত দিন প্রকাশ্যে আসেনি। সোমবার সেই ঘোষণা করে মাস্কের সংস্থা। টুইটারে টেসলা জানায়, ‘ভবিষ্যতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আমরা নগদ বিনিয়োগের নীতিতে কিছু পরিবর্তন এনেছি’। ওই টুইটেই ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা করা হয়। তাতেই লাফিয়ে বেড়ে যায় বিটকয়েনের দাম। জানুয়ারি মাসে গোড়ার দিকে যেখানে একটি বিটকয়েনের দাম ৪০ হাজার মার্কিন ডলার ছিল, মঙ্গলবার তা পৌঁছে যায় ৪৮ হাজারের সর্বকালীন উচ্চতায়।

এর সঙ্গেই আরও একটি সিদ্ধান্তের ঘোষণা করেছে টেসলা। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খুব শীঘ্রই আমাদের গাড়ি ও অন্যান্য পণ্যের দাম বিটকয়েনে মেটানো যাবে। সমস্ত আইন-কানুন মেনে শুরুতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ রেখে চালু করা হবে’।

Advertisement

কোভিডের সময় সারা বিশ্বেই অর্থনীতিতে ধস নেমেছিল। সেই সময় বিটকয়েন-সহ অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির দামও তলানিতে নেমে গিয়েছিল। তবে করোনার ধাক্কা কিছুটা সামলে উঠতেই ফের ঊর্ধ্বমুখী দৌড় শুরু হয়। ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২০ সালে প্রায় ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে বিটকয়েনের দাম। টেসলা মূলত বৈদ্যুতিক, ব্যাটারি ও সৌরশক্তিচালিত গাড়ি তৈরি করে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ক্রমেই বাড়তে থাকায় বিকল্প শক্তিচালিত গাড়ির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তার সঙ্গে বৃদ্ধি হচ্ছে টেসলার সম্পত্তিও। এর সঙ্গে বিটকয়েনে বিনিয়োগ করে সংস্থার আয় আরও বাড়বে বলেই মত বাজার বিশেষজ্ঞদের।

প্রশ্ন ওঠে, ক্রিপ্টোকারেন্সি কী? এক কথায় বলা যায় ডিজিটাল মুদ্রা, যার কোনও বাস্তব অস্তিত্ব নেই। যা ধরা, ছোঁয়া যায় না। শুধুমাত্র ভার্চুয়ালেই এই অস্তিত্ব। ব্লকচেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই মুদ্রা তৈরি হয়। কোনও ব্যাঙ্ক বা সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নেই এই মুদ্রার উপর। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কম্পিউটারের মাধ্যমে লেনদেন চলে।

আর বিটকয়েন হল প্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সি। সাতোশি নাকামোতো নামে জাপানের এক ব্যক্তি ২০০৯ সালে প্রথম বিটকয়েন তৈরি করেন। বাণিজ্যিক ভাবে প্রথম এই বিটকয়েনে লেনদেন হয় ২০১০ সালে। একটি পিৎজা কিনে সাতোশি তার দাম মেটান বিটকয়েনে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

বিটকয়েন লেনদেন করা হয় কম্পিউটার, সফটওয়্যার, কোডিং-এ বিরাট দক্ষতা থাকলে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং করা যেতে পারে। তবে সাধারণের পক্ষে সেটা খুব কঠিন। অন্য উপায় হল, ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনকারী কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগ করে বিটকয়েন-সহ যাবতীয় ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা করা যায়।

ভারতে বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ নয়। তবে ঘুরপথে লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে ২০১৮ সালের এপ্রিলে। ওই সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্দেশিকা জারি করে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনকারী কোনও সংস্থা বা অ্যাপে টাকা লেনদেন নিষিদ্ধ করে দেয়। ফলে ভারতে বর্তমানে কোনও ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা করা সম্ভব নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement