লক্ষ্য এখন একটাই, মুনাফার পথ না ছাড়া

আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত শতাব্দী প্রাচীন বেঙ্গল কেমিক্যালসের রুগ্‌ণ হওয়া শুরু তাঁর মৃত্যুর পরেই। মাঝে বিআইএফআরেও যায় সংস্থা। তবে দীর্ঘ ছ’দশক পরে ২০১৬-’১৭ সালে ফের লাভের দেখা মিলেছে।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৯
Share:

আশা: এগিয়ে যাওয়াই মন্ত্র। মানিকতলার কারখানা। —ফাইল চিত্র।

সম্প্রতি কেন্দ্রের বিলগ্নিকরণ প্রস্তাব খারিজ করে অক্সিজেন জুগিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাতে ভর করে এ বার সংস্থাকে চাঙ্গা রাখার লড়াইয়ে নতুন উদ্যমে ঝাঁপাচ্ছেন বেঙ্গল কেমিক্যালসের কর্মীরা। তাঁদের সংগঠনগুলির দাবি, উদ্বৃত্ত জমি ও বিলগ্নিকরণ নিয়ে মামলায় প্রাথমিক জয়ের পরে এখন লক্ষ্য একটাই, ঠিক সময়ে ব্যবসার বরাত জুগিয়ে সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্যের উন্নতি বহাল রাখা।

Advertisement

আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত শতাব্দী প্রাচীন বেঙ্গল কেমিক্যালসের রুগ্‌ণ হওয়া শুরু তাঁর মৃত্যুর পরেই। মাঝে বিআইএফআরেও যায় সংস্থা। তবে দীর্ঘ ছ’দশক পরে ২০১৬-’১৭ সালে ফের লাভের দেখা মিলেছে। যদিও পুঞ্জীভূত লোকসান এখনও মোছেনি। এই পরিস্থিতিতে ভাগ্য ফেরার প্রত্যাশায় বুক বাঁধতে না বাঁধতেই, পানিহাটি কারখানার উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির পাশাপাশি কেন্দ্র সংস্থাটির বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আঁধার ঘনায় কর্মীদের মনে। এ বার আদালত কেন্দ্রের প্রস্তাব খারিজ করায় যে স্বস্তি ফিরেছে, তা আর হারাতে চান না তাঁরা।

কেন্দ্র উচ্চ আদালতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেও, আপাতত সংস্থাকে চাঙ্গা রাখাই মূল মন্ত্র কর্মীদের, দাবি সিটু নেতা মৃণাল চক্রবর্তী ও তৃণমূল কংগ্রেসের শান্তনু বসুর। শান্তনুবাবু জানান, মানিকতলা কারখানায় তৈরি দু’টি অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশনের অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা থেকে প্রচুর বরাত এসেছে। কর্মীদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে। কার্যনির্বাহী এমডি পিএম চন্দ্রাইয়ার দাবি, সেখানে শীঘ্রই আরও দু’টি ওষুধের ইঞ্জেকশন তৈরির পরিকল্পনা আছে।

Advertisement

সালতামামি

• ১৯০১ সালে গোড়াপত্তন

• মানিকতলায় প্রথম কারখানা। পরে পানিহাটি, মুম্বই, কানপুরে

• ১৯৫৪-র পরে ছ’দশক লাভের দেখা মেলেনি

• দীর্ঘ লোকসানে ভুগে ১৯৭৭ সালে জাতীয়করণ

• ১৯৯২ সালে বিআইএফআরে

• ফের কার্যকরী লাভ ২০১৬-’১৭ সালে

• ২০১৭-র সেপ্টেম্বরে ব্যাঙ্কের ২৮ কোটি ঋণ শোধ

• চলছে ২১০ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ঋণ মেটানোর প্রক্রিয়া

মৃণালবাবুর কথায়, ‘‘এখন প্রথম কাজ বরাতের জোগান ঠিক রাখা। লাভের ধারা জারি রেখে সংস্থার স্বাস্থ্যের আরও উন্নতি। প্রয়োজনে কর্মীরা ‘ওভারটাইম’ কাজ করবে।’’ তবে একই সঙ্গে বেতন সংশোধনও জরুরি বলে দাবি তাঁর। বলেন, ‘‘এখনও কর্মীরা ১৯৯৭ সালের মাপকাঠিতেই বেতন পাচ্ছেন। ভালো টাকা না পেলে তরুণ প্রজন্ম আসবে কেন? আর সেটা না হলে সংস্থা এগোবে কী করে? উপরন্তু অনেকেই অবসর নিলেও স্থায়ী পদে নিয়োগ বন্ধ। এ ভাবে স্বাভাবিক মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে সংস্থাটিকে।’’

অন্য রাজ্যের হাসপাতাল ওযুধের বরাত দিলেও পশ্চিমবঙ্গ থেকেই কোনও বরাত পায় না বেঙ্গল কেমিক্যালস। শান্তনুবাবু জানান, দাম হিসেবের নিয়ম নিয়ে কিছু সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানোর চেষ্টা করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement