বেহাল পরিকাঠামোর সমস্যা বানতলা বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের পিছু ছাড়ছে না।
বৃষ্টির জেরে গত পাঁচ দিন ধরে বানতলা চর্মনগরীর একটি অংশ বিদ্যুৎহীন। বিদ্যুতের অভাবে ৫০টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই প্রায় ১০ কোটি টাকার উৎপাদন মার খেয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ চর্ম ব্যবসায়ীরা।
গত বৃহস্পতিবার থেকে আড়াই দিনের টানা বৃষ্টিতে বানতলা চর্মনগরীর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিগড়ে যায়। বৃষ্টি থামার পরেও তিন দিন সাব স্টেশন জলমগ্ন ছিল। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়। চর্ম ব্যবসায়ীদের সংগঠন ক্যালকাটা লেদার কমপ্লেক্স ট্যানারিজ অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, বিদ্যুৎ দফতরের কাছে একাধিকবার আর্জি জানিয়েও ফল হয়নি। বিদ্যুৎ না-থাকায় ৫০টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ।
প্রতি বর্ষাতেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা হয় বলেও অভিযোগ সংগঠনের। উৎসবের বাজার ধরার মুখেই উৎপাদন মার খায়। ঈদ, পুজো, দীপাবলি ও বড়দিনের মতো উৎসবের বাজারের চাহিদার জোগান দিতে এখন থেকেই বাড়তি উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হয় বলে জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ খান।
তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ নম্বর এফ্লুয়েন্ট পাম্পিং স্টেশনের উপর নির্ভরশীল জোন ওয়ানের ৫০টি কারখানা। সেগুলি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে রয়েছে এখনও। গড়ে প্রতিদিন দু’কোটি টাকার উৎপাদন মার খাচ্ছে।’’
ভাঙড় স্টেশন ম্যানেজারের কাছে চিঠির পর চিঠি দিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। অবশেষে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রমেশ জুনেজা রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের চেয়ারম্যান নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে বিষয়টি জানান। এর পর মঙ্গলবার দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান মারফত বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। মন্ত্রী দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তাঁরা। বিদ্যুৎ দফতরের অবশ্য দাবি, বড় কেব্ল ফল্ট হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সময় লাগছে।
বানতলার এই বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিল্পমহলও। তাদের মতে ছোট ও মাঝারি শিল্পে পুঁজি টানতে রাজ্য নয়া নীতি তৈরি করছে। অথচ যে-শিল্পতালুক থেকে ছোট ও মাঝারি চর্ম ব্যবসায়ীরা ৫,০০০ কোটি টাকার পণ্য রফতানি করছেন, তার জট ছাড়াতে প্রশাসনের উদ্যোগ নেই কেন? পরিকাঠামোর অভাবেই চর্মশিল্পে রাজ্যে প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার লগ্নি আটকে রয়েছে বলেও অভিযোগ।