উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতল, বিভিন্ন এলাকায় পচনশীল নানা পণ্য উৎপাদন হয়। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি-উড়ান প্রকল্পে জায়গা করে নিচ্ছে উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা এবং সিকিমের পাকিয়ং বিমানবন্দর। গত বছরের শেষ দিকে প্রকল্পটি শুরু হয়। তখনই এই দু’টির নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। এ বার বাগডোগরায় সেই কাজ শুরু হতে চলেছে। এর ফলে মূলত পচনশীল কৃষিজ পণ্য এবং খাদ্যসামগ্রী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং প্রয়োজনে বিদেশেও দ্রুত পাঠানো সম্ভব হবে। সরকারি সূত্রের খবর, বাগডোগরাকে ঘিরে গোটা উত্তরবঙ্গ, সিকিমের একাংশ, বিহার ও নম্নি অসমের চাষি এবং ছোট ব্যবসায়ীরা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন। বাগডোগরায় ‘পেরিশেবল কার্গো সেন্টার’ বা পচনশীল পণ্যের রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র থাকায়, সেখানে আগাম বিপণন সামগ্রী এনে রাখারও বন্দোবস্ত হতে পারে। পাকিয়ংকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে একই রকম পরিকাঠামো।
বিমান মন্ত্রকের অধীনে প্রকল্পটি চললেও এর সঙ্গে কৃষি, পশুপালন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিল্প-বাণিজ্যের মতো কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রক জড়িয়ে রয়েছে। মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া এলাকার অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্যই কৃষি-উড়ান আনা হয়েছে। নানা ছাড়ের সুবিধা নিয়ে চাষি থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ীরা তাঁদের মালপত্র বিমানে করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠাতে পারবেন। প্রকল্পটি মূলত পচনশীল এবং
খাদ্যসামগ্রীর জন্য।’’
উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতল, বিভিন্ন এলাকায় পচনশীল নানা পণ্য উৎপাদন হয়। যেমন, আম, আনারস, টোম্যাটো, লঙ্কা এবং ফুল ইত্যাদি। সেগুলির বাইরের রাজ্যে ভাল চাহিদা রয়েছে। সড়কপথে বা ট্রেনে ভিন্ রাজ্যে জোগান দেওয়া হয়। সেখানে নির্দিষ্ট এজেন্টদের মাধ্যমে পৌঁছয় গ্রাহকদের হাতে পৌঁছয়। দামের দিক বিবেচনা করে উদ্যানপালন বিভাগের কিছু পণ্য বিমানে বাইরে যায়। তবে তার খরচ বেশি হওয়ায় অনেকেই তাতে উৎসাহ দেখান না। কারণ, পচনশীল সামগ্রীর দাম বেশি হলে তা বিক্রি করার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়।
বিমানবন্দরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই প্রকল্পে বেশ কিছু ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে উৎপাদন এবং মালপত্র পাঠানোর খরচ কমলে ব্যবসায়ীরা উৎসাহ পাবেন। বাগডোগরা বিমানবন্দরের বাইরে পচনশীল পণ্যের রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। বাম-আমলে তৈরি। তবে বহু বছর তা অকেজো ছিল। প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকা খরচ করে সেটির পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। রোজ ২০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন ‘কার্গো সেন্টার’টি এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। শিলিগুড়ি মহকুমার কৃষি অধিকর্তা পার্থ রায় বলেন, ‘‘পরিবহণ খরচ বেশি হওয়ায় ভিন্ দেশে আনাজ পাঠাতে সমস্যা হয়। ছাড় দিয়ে বিমান পরিষেবা চালু হলে উত্তরবঙ্গের আনাজ বাইরে যেতে পারবে। এটা ভাল দিক। কিন্তু পরিবহণ খরচ কমানোর বিষয়টিও দেখতে হবে।’’