প্রতীকী ছবি।
প্রতি মাসে বা সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হিসাব দেয় না কেন্দ্র। তাই বেসরকারি উপদেষ্টা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি-র (সিএমআইই) পরিসংখ্যানে নজর থাকে সরকার থেকে বিরোধী, সব পক্ষের। কিন্তু গত রবিবার সংস্থাটি এপ্রিলের যে তথ্য তুলে ধরেছে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। সংশয় দানা বেঁধেছে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের পরিসংখ্যান নিয়ে। তাঁদের ইঙ্গিত, যে পদ্ধতিতে সিএমআইই সমীক্ষা করে, তাতে কাজের প্রকৃত ছবিটা তুলে ধরা কঠিন। বাস্তবে ভারতে কর্মহীন মানুষ হয়তো আরও বেশি, যা প্রক্রিয়াগত দোষেই ধরা পড়েনি পরিসংখ্যানে।
সিএমআইই রিপোর্টে বলেছে, গত মাসে ভারতে সার্বিক ভাবে বেকারত্বের হার মার্চের ৭.৬০% থেকে বেড়ে হয়েছে ৭.৮৩%। শহরাঞ্চলে তা ৮.২৮% থেকে বেড়ে হয়েছে ৯.২২%। তবে গ্রামাঞ্চলে কমে হয়েছে ৭.১৮%, যেখানে মার্চে ছিল ৭.২৯%।
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর দাবি, সিএমআইই মাসিক সমীক্ষা চালায় শহর এবং গ্রামের ৪৪ হাজারেরও বেশি পরিবারে। তবে সমীক্ষার দিন কেউ কিছু করছেন (যেমন রাস্তা থেকে কাগজ কুড়ানো) বললেই তাঁকে কর্মী ধরা হয়। অথচ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলেছে, যাঁরা ‘ভদ্রস্থ’ কাজ করছেন, তাঁদেরই শুধু কর্মী হিসেবে ধরা উচিত। তাঁর মতে, সিএমআইই ভদ্রস্থ কাজ থাকা এবং না থাকাকে আলাদা করে না বলেই তাদের রিপোর্টে বেকারত্বের প্রকৃত ছবি পাওয়া মুশকিল। আইএলও-র শর্ত প্রযোজ্য হলে তার হার অনেক বেশি হত।
যদিও সিএমআইই সূত্রের দাবি, তাদের পদ্ধতি যথেষ্ট কঠোর। সমীক্ষা চলে দৈনিক, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সমীক্ষার নির্দিষ্ট দিনে কাজ পেয়েছেন বলে কেউ নিশ্চিত না হলে প্রশ্ন করা হয়, তার আগের দিন তাঁর কাজ মিলেছিল কি? উত্তর ‘না’ হলে, কর্মহীনই ধরা হয় তাঁকে।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের বক্তব্য, পরিসংখ্যানের ওঠানামায় প্রকাশ অনিশ্চয়তা। তবে এমনটা পরিণত অর্থনীতিতে স্বাভাবিক। পরিসংখ্যানগত ভ্রান্তিও কিছু থাকে। কাজেই অর্থনীতির প্রকৃত ছবি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো কঠিন।