ফাইল চিত্র।
আশঙ্কা সত্যি করে ডিজ়েলের পথ ধরল পেট্রলও। প্রায় সওয়া দু’মাস পরে, মঙ্গলবার ফের বাড়ল পেট্রলের দাম। এ দিন কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে তা লিটার পিছু ২৫ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১০১.৮৭ টাকা। ডিজ়েল বিকিয়েছে ৯২.৬৭ টাকায়। আরও ২৫ পয়সা বেশি। কোনওটিই এখনও আগের রেকর্ড (পেট্রলের ১০২.০৮ টাকা, ডিজ়েলের ৯৩.০২ টাকা) ভাঙেনি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, দুশ্চিন্তা বাড়ছে। কারণ, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম যেখানে থাকাকালীন দেশে তেলের দর নজিরবিহীন উচ্চতা ছুঁয়েছিল, এখন তার থেকে বেশি। এক ব্যারেল ৭৯ ডলার ছাড়িয়ে তিন বছরে সর্বোচ্চ। তার উপরে আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রল-ডিজ়েলও চড়া। ফলে এই দফায় দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কোথায় পৌঁছবে তা নিয়ে আশঙ্কা দানা বাঁধছে। জ্বালানির খরচে হাঁসফাঁস আমজনতার জন্য আর কত দুর্ভোগ অপেক্ষা করে আছে, আবার তারই চর্চায় গোটা দেশ।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞেরা আরও এক বার মনে করাচ্ছেন পেট্রল-ডিজ়েলে চড়া উৎপাদন শুল্কের কথা। কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, রাজ্যের ভ্যাট চড়া। সেটাই বরং কমুক। জিএসটি-র আওতায় তেলকে আনারও সওয়াল করছে তারা। তবে জিএসটি পরিষদের কোর্টে ঠেলে দেওয়া সেই সিদ্ধান্ত এখনও অধরা রাজ্যগুলির
মতের ফারাকে।
শেষ বার ১৭ জুলাই বেড়েছিল পেট্রলের দাম। ডিজ়েল রেকর্ড গড়েছিল ১৫ জুলাই। তার পর থেকে দীর্ঘ দিন তা স্থির থাকে। মাঝে সামান্য কমে। আজ, বুধবার অবশ্য দর স্থির।
ক’দিন ধরেই বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল এবং পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ছে। সম্প্রতি ভারত পেট্রলিয়ামের সিএমডি অরুণ কুমার সিংহের ইঙ্গিত ছিল, সেগুলি আগামী মার্চ পর্যন্ত চড়ার দিকে থাকবে। তাঁর বক্তব্য, করোনার প্রভাব কাটিয়ে আর্থিক কর্মকাণ্ড বাড়ায় তেলের চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা বাড়ছে প্রাকৃতিক গ্যাসেরও। কিন্তু গ্যাসের অভাব ঘটলে বিকল্প হিসেবে সকলে তেলই কিনতে চাইবে। ফলে চড়বে দাম। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। বিশ্ব জোড়া জ্বালানি সঙ্কটেই অশোধিত তেল দামি হচ্ছে। ভুগছে ভারতের মতো আমদানিকারী দেশ। তার উপরে তেল রফতানিকারী দেশগুলিও এখনও জোগানে রাশ শিথিল করেনি।
বাজারে জল্পনা, প্রতি ব্যারেল অশোধিত তেল ৯০ ডলারে পৌঁছতে পারে। ব্যবসায়ী মহলের একাংশ ২০২২ সালের শেষে তার ১০০ ডলার হওয়া নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করছে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন হল, দেশে পেট্রল-ডিজ়েল কোথায় পৌঁছবে? সকলেরই আর্জি, সেই কথা ভাবার বদলে আপাতত নিজেদের ভাগের কর খানিকটা হলেও কমিয়ে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিক কেন্দ্র-রাজ্য।