—প্রতীকী চিত্র।
গত অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) অশোধিত তেলের আমদানি খাতে নিট ৯৬১০ কোটি ডলার খরচ করেছিল ভারত। পশ্চিম এশিয়ার সমস্যার জেরে সম্প্রতি তার দাম নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। এর ফলে আমদানির পরিমাণ না বাড়লেও চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) সেই খরচ ১০,১০০ থেকে ১০,৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে বলে জানাল ইক্রা। সেই সঙ্গে দেশীয় মূল্যায়ন সংস্থাটির সতর্কবার্তা, ইরান-ইজ়রায়েলের সম্পর্কের আরও অবনতি হলে তা তেল আমদানির বিলকে আরও বাড়াতে পারে। আরও চাপে পড়তে পারে দেশ। ভারতে তেলের চাহিদার প্রায় ৮৫% আমদানি হয়।
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, দীর্ঘ দিন ধরে অশোধিত তেলের ব্যারেল ৮০ ডলারের নীচে ছিল। কিন্তু তার সুবিধা ভারতের সাধারণ মানুষের দরজায় পৌঁছয়নি। বরং পেট্রল-ডিজ়েলের দাম দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অপরিবর্তিত রেখে কেন্দ্র দাবি করছিল, তেল সংস্থাগুলি বিশ্ব বাজারের চড়া দামে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সাধারণ মানুষের গায়ে তার আঁচ লাগতে দেয়নি। হালে ভোট ঘোষণার আগে লিটারে দু’টিরই দর ২ টাকা করে কমানো হয়। আজ ইন্ডিয়ান অয়েলের দাবি, জানুয়ারি-মার্চের নিট মুনাফা সেই কারণেই কমে অর্ধেক হয়েছে। পড়েছে শেয়ার দর। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করায় চিন্তা চড়ছে। ভোট মিটলে পেট্রোপণ্যের দামের অভিমুখ কী হতে পারে, প্রশ্ন থাকছেই।
ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য রাশিয়ার উপরে বিধিনিষেধ বসিয়েছিল আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ পশ্চিমের দেশগুলি। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়ায় ভারত। ইক্রার হিসাব, এর ফলে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৫১০ কোটি ডলার সাশ্রয় হয়েছিল। গত অর্থবর্ষের প্রথম ১১ মাসে (এপ্রিল-ফেব্রুয়ারি) তা বেড়ে হয় ৭৯০ কোটি ডলার। তারা বলছে, ‘‘যদি ভারতের তেল আমদানির নির্ভরতা ও রুশ তেলে ছাড় একই থাকে, তা হলেও চলতি অর্থবর্ষে এই খাতে খরচ বেড়ে হতে পারে ১০,১০০-১০,৪০০ কোটি ডলার। অশোধিত তেল ৮৫ ডলার ধরে হিসাব কষা হয়েছে।’’ অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম অবশ্য এখন ৮৮ ডলারের উপরে। ইক্রা বলছে, তা ৯৫ ডলার হলে আমদানি খরচ বাড়তে পারে ১২০০-১৩০০ কোটি ডলার।