আমেরিকাতেও পড়েছে আদানি সংস্থার শেয়ারের দর। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বুধবার রাতেই স্থগিত হয়ে গিয়েছিল আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের নতুন শেয়ার ছাড়ার (এফপিও) প্রক্রিয়া। এর পর ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানি ভিডিয়ো বার্তায় তাঁর সংস্থার ওই সিদ্ধান্তের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবারই আদানি গোষ্ঠীর অন্তত দু’টি সংস্থা আমেরিকায় তাদের বন্ডগুলিতে লগ্নিকারীদের কুপনের সাহায্যে ডলার মারফতই নির্ধারিত মূল্য মিটিয়ে দিয়েছে।
আদানি শিল্পগোষ্ঠীর ‘প্রতারণা’ নিয়ে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকে টানা পড়ে চলেছে তাদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকায় তাদের এই পদক্ষেপ ব্যবসায়ীক দিক থেকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। আদানি পোর্টস এবং ‘স্পেশাল ইকনমিক জোন’ তাদের বন্ডগুলিতে কুপন রেটেই অর্থ দিয়েছে। আদানি ট্রান্সমিশনের তরফেও বৃহস্পতিবার বন্ড পেমেন্টের প্রক্রিয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্টে দাবি করেছিল, এক দশক ধরে শেয়ারের দরে কারচুপি করছে আদানি গোষ্ঠী। ২৪ জানুয়ারি ওই রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই আদানিদের ১০টি সংস্থার শেয়ারে ধস নামে। প্রাথমিক ভাবে আদানিরা বিবৃতিতে অভিযোগ করে, হিন্ডেনবার্গ স্বল্পমেয়াদি মুনাফার জন্য রিপোর্ট তৈরি করেছে। এটা ভারতের অগ্রগতি রোখার চক্রান্ত। এই আক্রমণাত্মক বিবৃতি সত্ত্বেও অবশ্য হাল ফেরেনি। উপরন্তু, হিন্ডেনবার্গ পাল্টা বলে, জাতীয়তাবাদের আড়ালে প্রতারণা ঢাকা দেওয়া যায় না।
এরই মধ্যে ২৪-৩১ জানুয়ারি আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের ২০,০০০ কোটি টাকার এফপিও খোলা ছিল। সাধারণ লগ্নিকারী এবং সংস্থার কর্মীরা বিশেষ সাড়া না দিলেও, মূলত শিল্প সংস্থাগুলির উপরে নির্ভর করে তার পুরোটার জন্যই জমা পড়েছিল আবেদন। কিন্তু বুধবার আদানির সংস্থা বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের পর্ষদ এফপিও নিয়ে না এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নজিরবিহীন অবস্থা এবং বাজারের অস্থিরতার জন্য লগ্নিকারীদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। তাদের থেকে সংগ্রহ করা পুঁজিও ফেরানো হবে।’’