— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভারতীয় মাছে আমদানি শুল্ক বসাচ্ছে আমেরিকা। এর ফলে বিশেষ করে চিংড়ির রফতানি মার খাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এ দেশ থেকে রফতানি হওয়া মাছের প্রায় ৯০ শতাংশই চিংড়ি। এর ফলে সমস্যায় পড়তে পারেন চিংড়ি চাষিরাও। গোটা ঘটনায় প্রমাদ গুনছে পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্য মহল। কারণ চিংড়ি চাষ এবং রফতানির বড় অংশীদার এ রাজ্য।
রফতানিকারীরা জানিয়েছেন, আগামী মাস থেকে ভারতীয় মাছে ৬% কাউন্টারভেলিং ডিউটি বসাচ্ছে আমেরিকা। এটি এক ধরনের আমদানি শুল্ক। এ দেশে মাছ চাষের উপর পরোক্ষ ভাবে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, এই ধারণা থেকেই নিজেদের দেশের বাজারে দামে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য তা বসাচ্ছে আমেরিকা।
এর ফলে চিংড়ির রফতানি-বাজার হারাতে হতে পারে বলে আশঙ্কা মাছ রফতানিকারীদের সংগঠন সিফুড এক্সপোর্টার্স অ্যায়োসিয়েশনের। সংগঠনের সভাপতি রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দেশের যে সব অঞ্চল থেকে চিংড়ি রফতানি হয়, তার অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। বছরে যার অঙ্ক ১০,০০০ কোটি টাকা (সারা দেশে প্রায় ৭০,০০০ কোটি)। রাজ্যে চিংড়ি চাষ থেকে শুরু করে তা রফতানির উপর কয়েক লক্ষ মানুষের রুটি-রুজি নির্ভর করছে। এগুলির বড় বাজার আমেরিকা। কিন্তু আমেরিকা শুল্ক বসালে সেখানে ভারতীয় মাছের দাম বাড়বে। এখানকার রফতানিকারীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে বাজার হারাবেন। শুল্ক বসানোর ওই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং এই সংগঠন যৌথ ভাবে আমেরিকার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করবে বলেও জানান রাজর্ষি।
রফতানিকারীদের দাবি, এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে নানা কারণে মার খাচ্ছে চিংড়ির উৎপাদন। তার বৃদ্ধি থমকে গিয়েছে। কারণ, পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির মতো চিংড়ি চাষের জন্য বিদ্যুতের দামে সুরাহা মিলছে না। তা অনেকটা বেশি। তার উপর পরিবহণে সেস আদায় করা হচ্ছে। চিংড়ি চাষের জমি লিজ় নেওয়ার ভাড়াও অন্য রাজ্যের থেকে চড়া। রাজর্ষির আক্ষেপ, এর ফলে এ রাজ্যের বর্তমান চিংড়ি চাষিরা চাষের জমি বাড়াতে আগ্রহী নন। যা উৎপাদন বৃদ্ধির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই রফতানিতে ধাক্কা দিয়েছে বিষয়গুলি।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের আর্জি, পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে অবিলম্বে রাজ্য সরকারের চিংড়ি চাষি এবং রফতানিকারীদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। সাধারণ চাষের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম যে হারে নেওয়া হয়, তা চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করার আর্জি জানিয়েছে রফতানিকারীদের সংগঠন। পাশাপাশি তারা চায়, চাষিদের কাছ থেকে কিনে আনার সময় যেন পরিবহণের উপর সেস না দিতে হয়। প্রক্রিয়াকরণের পরে সেই চিংড়ি রফতানির জন্য বন্দরে নিয়ে যাওয়ার সময়েও সেস ছাড়ের আবেদন জানানো হয়েছে।