প্রতীকী ছবি।
এক সময় ভারতীয় সংবিধানের বেশ কিছু খণ্ড ছেপেছিল যে হুগলি প্রিন্টিং কোম্পানি (এইচপিসি), তারাই এখন ধুঁকছে বরাতের অভাবে। অন্য উপায় না-দেখে তাই সরকারি বরাত বেশি পেতে রাজ্য ও কেন্দ্রের দ্বারস্থ হচ্ছে অ্যান্ড্রু ইয়ুলের ওই শাখা সংস্থা।
১৮৬৩ সালে স্কটিশ শিল্পোদ্যোগী অ্যান্ড্রু ইয়ুল এ দেশে ব্যবসা শুরুর পরে, অর্ধ শতকের মধ্যেই তা কলকাতার বৃহত্তম সংস্থায় পরিণত হয়। ১৯১৯ সালে তৈরি হয় ইন্ডিয়ান পেপার পাল্প (আইপিপি) ও ১৯২২-এ হুগলি প্রিন্টিং। সোমবার অ্যান্ড্রু ইয়ুলের বার্ষিক সভার পরে সিএমডি দেবাশিস জানা জানান, ১৯৪৯ সালে দেরাদুনের সরকারি ছাপাখানা থেকে প্রথমে সংবিধানের কয়েক খণ্ড ছাপা হয়। চাহিদা বাড়ায় পরে আরও কিছু খণ্ড ছাপানোর দায়িত্ব আরও অনেকের সঙ্গে পায় এইচপিসি-ও। কাগজ আসে আইপিপি থেকে।
এ হেন ঐতিহ্যবাহী সংস্থা কিন্তু পরবর্তীকালে বরাত টানার প্রতিযোগিতায় বাকিদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। দেবাশিসবাবু জানান, এমনকী মূলত সরকারি বরাতের ভরসাতেই টিকে থাকলেও, হালে তা-ও কমেছে। কেন্দ্রের তরফে প্রায় নেই বললেই চলে। রাজ্যের থেকেও আসছে অনেক কম। বছরে যা সাধারণত ২০-২৫ কোটি টাকা হয়, এ বার তা নেমেছে অর্ধেকে। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে ব্যবসা চালিয়ে যেতে হলে প্রয়োজন ৩০ কোটি টাকার বরাত। দেবাশিসবাবুর দাবি, ‘‘এ নিয়ে দুই সরকারের সঙ্গেই কথা বলছি। সরকারি বই-সহ অন্যান্য কিছু ছাপার আরও বরাত চাইব।’’
সে ক্ষেত্রে ঠাকুরপুকুরে অ্যান্ড্রু ইয়ুলের জমিতে নতুন যন্ত্র-সহ ছাপাখানা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। কারণ, যে বাড়িতে এখন ছাপাখানাটি রয়েছে, সেটির লিজ কয়েক বছরের মধ্যে শেষ হবে।
এ দিকে, চা, বৈদ্যুতিন ও ইঞ্জিনিয়ারিং-সহ অন্যান্য ব্যবসাগুলিও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে অ্যান্ড্রু ইয়ুল। যেমন, ২০১৭-’১৮ সালে চা ব্যবসায় ৮ কোটি টাকা লগ্নি করবে। ক্ষুদ্র চাষিদের থেকে পাতা কিনে চা তৈরি করতে আগামী বছর অসম ও ডুয়ার্সে দু’টি বটলিফ কারখানা কিনবে। চেন্নাইয়ের বৈদ্যুতিন কারখানার কিছু পণ্য তৈরি করবে কলকাতার কারখানায়। চেন্নাইয়ের কারখানায় তৈরি করবে নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যও।
উল্লেখ্য, ২০১৬-’১৭ সালে অ্যান্ড্রু ইয়ুলের নিট মুনাফা ২২৮% বেড়ে হয়েছে ২৭.৩৯ কোটি টাকা। শেয়ারে ৫% ডিভিডেন্ড দেবে তারা।