প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন। — ফাইল চিত্র।
গত সেপ্টেম্বরে গঙ্গার নীচে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানোর মূল পাইপলাইন বসানোর কাজ সম্পূর্ণ করেছে গেল। নির্দিষ্ট সময়ে তা শেষ হওয়ার পরে এ বার রাজ্যে চর্চা শুরু হয়েছে, নদিয়ার গয়েশপুর পর্যন্ত পুরো পাইপলাইন নির্মাণের কাজ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার (আগামী মার্চ-এপ্রিল) মধ্যে করা যাবে তো? সূত্রের খবর, সে জন্য এ মাসেই সব জায়গায় পাইপ বসানোর (রাইট ওব ইউজ় বা আরওইউ) অনুমোদন পাওয়া এবং তা নির্মাণের কাজ শুরু করা জরুরি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এখনও সমস্যার জন্য পাইপ বসানোর গতি প্রয়োজনের চেয়ে কম। এ দিকে শিল্পমহলের একাংশের প্রশ্ন, পাইপলাইনের গ্যাস শেষ পর্যন্ত সস্তা হবে তো? না হলে লাভ হবে না।
গেল-এর জগদীশপুর (উত্তরপ্রদেশ)-হলদিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইনটি এসেছে পানাগড়ের ম্যাটিক্স কারখানা পর্যন্ত। সেখান থেকে হুগলির রাজারামবাটি-ব্যান্ডেল হয়ে গঙ্গার নীচ দিয়ে গয়েশপুর পৌঁছবে। গেল-এর থেকে পরিবহণ, রান্না এবং শিল্পোৎপাদনের জ্বালানি হিসেবে ওই গ্যাস কিনে বিজিসি, আইওএজি, এইচপিসি, আইওসি, বিপিসি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তাদের শাখা পাইপলাইন মারফত ক্রেতাদের বণ্টন করবে। আপাতত গেল বিশষ ভাবে সিলিন্ডারে ভরে ট্রাকে করে (কাসকেড পদ্ধতিতে) কোল বেড মিথেন গ্যাস বিজিসি, আইওএজি, এইচপিসি-কে জোগাচ্ছে। পরে সরাসরি পাইপেই তা যাবে।
মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে গয়েশপুর পর্যন্ত পাইপ বসাতে পারা নিয়ে সূত্রের দাবি, কিছু জায়গায় এখনও সেই অনুমতি মেলেনি। একাংশে কাগুজে অনুমতি মেলার পরেও নতুন করে জমি ব্যবহার নিয়ে আলোচনা চলছে। ম্যাটিক্স কারখানার পর থেকে রাজারামবাটি পর্যন্ত প্রায় ১১০ কিলোমিটার প্রস্তাবিত পাইপলাইনের হুগলির অংশ প্রায় ৯০% শেষ। বর্ধমানে অনেকটা বাকি। রাজারামবাটি থেকে গয়েশপুরের ২০ কিলোমিটার পথেরও কিছুটা সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু মাঝের বহু জায়গায় কাজ শুরুই হয়নি।
তবে গেল রাজ্যের সহযোগিতা নিয়ে আশাবাদী। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের গতি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। জেলা প্রশাসন-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী। মাস কয়েক আগে জমির জটিলতা কাটাতে জেলা প্রশাসনকে ফের নির্দেশ দেয় নবান্ন।
বণিকসভা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বারের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সমীর ঘোষ শনিবার বলেন, ‘‘বিকল্প জ্বালানি হিসাবে গ্যাস চায় শিল্প। তাতে দূষণ কমবে। কিন্তু বিশ্ব জুড়ে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যায় গ্যাসের দামও বাড়ছে। এত দিনের প্রচলিত জ্বালানির চেয়ে তা যেন কম হয়। না হলে লাভ হবে না।’’