গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
গৌতম আদানি এবং তাঁর ভাইপো সাগরের বিরুদ্ধে আমেরিকার তোলা ঘুষ দিয়ে বরাত পাওয়ার অভিযোগে উত্তাল দেশ। যা ভিত্তিহীন বলে আগেই উড়িয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে তাদের দাবি, আমেরিকায় আদৌ ঘুষের অভিযোগ আনাই হয়নি গৌতম ও সাগরের বিরুদ্ধে। এই মর্মে বুধবার শেয়ার বাজার বিএসই-তে দাখিল করা তথ্যে জানিয়েছে গোষ্ঠীর অপ্রচলিত বিদ্যুৎ সংস্থা আদানি গ্রিন এনার্জি (এজিএল)।
আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাটি এ দিন দাবি করেছে, তাদের কর্ণধার এবং এজিএলের ডিরেক্টর গৌতম আদানি এবং তাঁর সঙ্গে সংস্থার আরও দুই ডিরেক্টর সাগর ও বিনীত জৈন ১৯৭৭ সালে চালু হওয়া আমেরিকার ঘুষ বিরোধী আইন ‘ফরেন কোরাপ্ট প্র্যাক্টিসেস আ্যাক্ট’ (এফসিপিএ) লঙ্ঘন করেছেন বলে নিউ ইয়র্কের আদালতে কোনও অভিযোগ করেনি আমেরিকার বিচার বিভাগ। পাশাপাশি এজিএলের দাবি, সংস্থার বিরুদ্ধে আমেরিকার সশ্লিষ্ট দফতরের তদন্ত আটকানোর জন্য ওই তিন জনের কলকাঠি নাড়ানোর অভিযোগও নেই। অথচ তাঁদের বিরুদ্ধে এই সমস্ত কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় গোষ্ঠী বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাজারে তাদের মোট শেয়ার মূল্য ৫৪০০ কোটি ডলার (প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা) কমেছে।
নথিতে বলা হয়েছে, তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকার বিচার বিভাগ ও বাজার নিয়ন্ত্রক এসইসি যথাক্রমে ফৌজদারি ও দেওয়ানি আইনে মামলা করেছে। ফৌজদারি অভিযোগগুলির মধ্যে আছে সিকিয়োরিটিজ় (শেয়ার এবং ঋণপত্র) সংক্রান্ত এবং ওয়্যার (টেলিফোন-সহ বৈদ্যুতিন যোগাযোগ মাধ্যম) ব্যবহার করে প্রতারণার যড়যন্ত্র। দেওয়ানি আইনেও অভিযোগ আনা হয়েছে শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারের নিয়ম লঙ্ঘন সংক্রান্ত প্রতারণার। সাধারণ ভাবে ঘুষের অভিযোগের তুলনায় ওই তিন অভিযোগের শাস্তি কম। অভিযুক্তদের শুধু জরিমানা করা হয়।
উল্লেখ্য, আমেরিকায় এজিএলের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, বাজারের থেকে বেশি দামে সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহের বরাত পেতে ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি কর্তাদের গৌতম, সাগরেরা ঘুষ দিয়েছেন। যার অঙ্ক ২২০০ কোটি টাকা (২৬.৫০ কোটি ডলার)। ঘুষের কথা গোপন করে আমেরিকা ব্যাঙ্ক এবং লগ্নিকারীদের থেকে প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা তোলে এজিএল। যা প্রতারণা।
তবে গৌতম, সাগর ও বিনীতের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ দায়ের হয়নি জানালেও, কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে তা তোলা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আদানি গোষ্ঠীর বিবৃতিতে। যদিও তাঁরা কী ভাবে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত তার উল্লেখ নেই সেখানে। এজিএল জানিয়েছে, সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরে শুধু শেয়ার দরে পতনই নয়, বিদেশেও ঝুঁকির মুখে পড়েছে তাদের নানা প্রকল্পও। যদিও সংস্থার এই বিবৃতি প্রকাশের পরেই বুধবার গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম ২০% পর্যন্ত বেড়েছে।