শেয়ার সূচক সেনসেক্সের হিসাব বলছে চলতি সপ্তাহে শেয়ার বাজারে শীর্ষে রয়েছে আদানির তিন সংস্থা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শেয়ার বাজারে ‘রক্তক্ষরণ’ বন্ধ হয়েছিল আগেই। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ গৌতম আদানির মালিকানাধীন তিনটি সংস্থা লাভের নিরিখে চলে এল প্রথম সারিতে। শেয়ার সূচক সেনসেক্সের হিসাব বলছে চলতি সপ্তাহে শেয়ার দরে লক্ষণীয় উত্থান ঘটেছে আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি গ্যাস এবং আদানি গ্রিন এনার্জির। লাভের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে তারা।
শেয়ার বাজারে বিপর্যয়ের মুখেও ফেব্রুয়ারির গোড়ায় আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের ২ কোটি ৭৫ লক্ষ ৬০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ৩ শতাংশ) এবং আদানি ট্রান্সমিশন লিমিটেডের ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ১.৪ শতাংশ) বাজারে আনা হয়েছিল। শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজেদের অর্থনৈতিক ভাবে সবল দেখাতে এবং শেয়ারের দরে ‘রক্তক্ষরণ’ কমাতেই ছিল এই সিদ্ধান্ত।
অতীতে ওই শেয়ারগুলির পরিবর্তে বাজার থেকে টাকা ঋণ নিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। সেই ঋণ পরিশোধের সময় ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যম্ত। কিন্তু ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই আগাম সেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেয় আদানি গোষ্ঠী। ফেরত পায় বন্ধক থাকা শেয়ারগুলি। সেই শেয়ারগুলিই বাজারে এনে তারা বিপুল লাভের মুখ দেখল বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের বাজার বন্ধের হিসাব বলছে, গড়ে ৫ শতাংশেরও বেশি শেয়ার দর বেড়েছে ওই তিন সংস্থার। তবে গৌতমের মূল সংস্থা আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড এবং আদানি পাওয়ার লিমিটেড ও আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের দর ১ থেকে ২ শতাংশ কমেছে। প্রসঙ্গত, শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে সরকারি স্তরে নানা বেআইনি সুবিধা পেয়েছেন আদানি।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর এক এক করে আদানি গোষ্ঠীর একাধিক সংস্থার শেয়ারে ধস নেমেছিল। নিজেদের সম্পত্তির প্রায় অর্ধেক খুইয়ে ফেলেছিল আদানির মালিকাধীন শিল্পগোষ্ঠী। যার আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ৯ লক্ষ ৯২ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। শোচনীয় অবস্থা হয় আদানি এন্টারপ্রাইজেরও। কিন্তু চলতি মাসের গোড়া থেকেই পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। আদানিদের বহু সংস্থাই ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে।