ফাইল চিত্র।
অশোকনগরে রাষ্ট্রায়ত্ত ওএনজিসি-র তেল-গ্যাসের পরে পশ্চিমবঙ্গে গ্যাস ক্ষেত্রে আসতে পারে বড় অঙ্কের লগ্নি। রানিগঞ্জে শেল গ্যাস (পাথরের খাঁজে আটকে থাকা প্রাকৃতিক গ্যাস) উত্তোলনের লক্ষ্যে প্রায় ২০০ কোটি ডলার বা ১৫,০০০ কোটি টাকা ঢালার কথা ভাবছে গ্রেট ইস্টার্ন এনার্জি কর্পোরেশন (জিইইসিএল)। সংস্থার এমডি-সিইও প্রশান্ত মোদী এ কথা জানিয়ে বলেন, সেখানে সাউথ ব্লক থেকে এই গ্যাস তুলতে চান তাঁরা। শেল গ্যাসের উত্তোলনের জন্য রাজ্যের থেকে পেট্রোলিয়াম খনন সংক্রান্ত সংশোধিত লিজ় হাতে পাওয়ার অপেক্ষা করছে সংস্থা। যা পেলেই ভৌগোলিক এবং অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য সেখানে কূপ খনন করবে জিইইসিএল।
২০০১ সালের মে মাসে পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে দেশের প্রথম কোল বেড মিথেন (সিবিএম) উত্তোলনের জন্য চুক্তি করেছিল সংস্থাটি। তার আগে ১৯৯৩ সাল থেকে কোল ইন্ডিয়ার অধীনে ছিল ওই ব্লক। সেখানে জিইইসিএল-এর হাত ধরে উত্তোলন শুরু হয় ২০০৭ সালের জুলাইয়ে। দেড় দশক ধরেই হিরাপুরের কুইলাপুর থেকে আসানসোলের ডামরা, ভালুকসোঁদা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে কোল বেড মিথেন তোলে তারা। পাইপলাইনের মাধ্যমে তা পাঠায় বিভিন্ন সংস্থা ও কারখানায়।
প্রশান্ত বলেন, এই ব্লকে ৬.৬৩ লক্ষ কোটি ঘনফুট শেল গ্যাস থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত রাজ্য সরকারের থেকে সংশোধিত লিজ় হাতে পাওয়ার অপেক্ষা। তার পরে কূপ খনন শুরু হবে। তাঁর কথায়, ‘‘কোল বেড মিথেনের ক্ষেত্রে দেশে সংস্থা যে দিশা দেখিয়েছে, শেল গ্যাসের ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই করতে চাই আমরা।’’ আপাতত পরিকল্পনা অনুসারে, পরীক্ষামূলক কূপ খননের ফল এবং বিশ্লেষণ হাতে এলে প্রাথমিক ভাবে তা খনন করা শুরু করবে জিইইসিএল। মোদী বলেন, সেই ফল সন্তোষজনক হলে এবং সংস্থার আশা অনুযায়ী সম্ভাবনা দেখলে সেখানে সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ কোটি ডলার বা ১৫,০০০ কোটি টাকা লগ্নি করবেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, রাজ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় অশোকনগরে ইতিমধ্যেই তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান এবং খননে আরও বেশি করে জোর দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ওএনজিসি-ও। এ জন্য আগামী তিন বছরের মধ্যে বেঙ্গল বেসিনের অঙ্গ ওই প্রকল্পে ৫০০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। আরও বেশি জমি কিনেছে প্রকল্পটির পরিধি বাড়ানোর জন্য। তার পরে এ বার জিইইসিএল-এর লগ্নি পরিকল্পনা গ্যাস ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্ব আরও বাড়াবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এ দিকে, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসকে জিএসটি-র আওতায় আনার পক্ষেও সওয়াল করেছেন প্রশান্ত। বলেছেন, সরকার তেলের দাম বেশি হওয়ায় সংস্থার মুনাফার বাড়তি কর বসালে তা এই শিল্পের পক্ষে লোকসানের। কারণ, অনেক সময়েই কোনও ক্ষেত্রে সম্ভাবনা অনুসারে তেল ও গ্যাস না-পাওয়া গেলে সংস্থাগুলির প্রাথমিক লগ্নির পুরোটাই জলে যায়। ফলে তাদের কথাও মাথায় রাখা জরুরি। কেন তেলের দাম শূন্যের নীচে বা ব্যারেলে ২০-৩০ ডলার থাকার সময়ে নীতি নির্ধারকদের দেখা মেলে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।