মাঙ্গলিক দোষের প্রভাব নিয়ে আলোচনায় জ্যোতিষশাস্ত্রবিদ ডাঃ সোহিনী শাস্ত্রী
আমরা প্রায়শই বলে থাকি ‘মঙ্গল হোক!’ অর্থাৎ শুভ হোক। কিন্তু মঙ্গল কি সব সময়ে শুভ হয়? মঙ্গল থেকেই আসে মাঙ্গলিক। আর মাঙ্গলিক শব্দটা শুনলেই সাধারণত মানুষ ভয় পায়। কিন্তু মঙ্গল খারাপ থাকলেই কি সেই জাতক বা জাতিকা মাঙ্গলিক হয়? এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদ ডাঃ সোহিনী শাস্ত্রী।
অনেকের মনে একটা স্বাভাবিক প্রশ্ন আসে মঙ্গল কথাটার মানে ঠিক কী? আর মঙ্গল খারাপ মানেই কি সে মাঙ্গলিক? এর উত্তর হল ‘হ্যাঁ’, মঙ্গল খারাপ মানেই কিন্তু সে মাঙ্গলিক। যখন লগ্নে দ্বিতীয়, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম, দ্বাদশ ঘরে মঙ্গল থাকে, তখন বলা হয় যে সেই জাতক বা জাতিকা মাঙ্গলিক দোষে দুষ্ট। মাঙ্গলিক হলেই যে তা সার্বিক ভাবে ক্ষতিকর, তা কিন্তু নয়। তবে মানুষের জীবনে, বিশেষত বিয়ের ক্ষেত্রে মঙ্গল একটা বিশেষ ভূমিকা রাখে।
মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে প্রথমে একটু পরিচয় দেওয়া যাক। রবি থেকে চতুর্থ গ্রহ হল মঙ্গল। এটি অত্যন্ত প্রতিকূল ও আক্রমণাত্মক গ্রহ। কোনও মানুষের ভিতরে যে শক্তি ও আত্মবিশ্বাস দেখা যায়, তা মঙ্গল গ্রহ উন্নত হলেই সম্ভব হয়। এরা কিন্তু আবার রাগী স্বভাবেরও হয়। বিশেষত লগ্নে মঙ্গল থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি খুবই বদমেজাজি হয়। সে কারণে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে প্রায়ই বড়সড় ঝামেলা বাধে।
কারও মঙ্গল খারাপ মানেই সেই ব্যাক্তি মাঙ্গলিক। যখন মঙ্গল আগে উল্লেখিত ৬টি ভাবে থাকে, তখন বিভিন্ন ভাবে জীবনে তার প্রভাব পড়ে। আবার দেখা যায় মাঙ্গলিক মহিলারা খুবই স্ব-প্রতিষ্ঠিত হন। নিজ নিজ ক্ষেত্রে খুবই উন্নতি করে তাঁরা জীবনে অনেক কিছু অর্জন করতেও সক্ষম হন।
মাঙ্গলিক ব্যাক্তিদের বিয়েতে জীবন কি সুখের হয় না?
এটা কিন্তু পুরোপুরি নির্ভর করে ছেলে ও মেয়ের জন্ম পত্রিকার উপর। আগে জন্ম পত্রিকা বিচার করে যদি দেখা যায় যে, দুই জনেরই মঙ্গলদোষ আছে, সে ক্ষেত্রে এই দোষ অনেকটাই প্রশমিত হয়ে যায়। সামান্য মতবিরোধ কিংবা তর্ক থাকলেও বিয়ে কিন্তু ভাল ভাবেই টিকে যায়।
মাঙ্গলিক হতে গেলে কিছু মৌলিক মানদণ্ড (basic criteria) থাকে:
একটা কথা আমরা বলে থাকি যে মাঙ্গলিক দোষ থাকলে সব সময়ে ২৮ বছরের পরেই বিয়ে করা বা দেওয়া উচিত। ভারতবর্ষে এমন অনেক পরিবার আছে, যাদের জ্যোতিষশাস্ত্রর প্রতি আস্থা নেই। তারা মাঙ্গলিক সন্তানের ২২ কি ২৪ বছরের মধ্যে বিয়ে দিয়ে দিলে দেখা যায় যে ২৮ বছরের মধ্যে হয়তো বৈধব্য যোগ এসে যায় কিংবা ডিভোর্সের আইনি ঝকমারি সামলাতে হয়। কখনও কোন এক জন সঙ্গীকে দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগতে দেখা যায় ও পরবর্তী কালে তার জীবনহানি ঘটতেও দেখা যায়। তাই সব সময়ে মাঙ্গলিক জাতক-জাতিকার বিয়ে মাঙ্গলিক জাতক বা জাতিকার সঙ্গেই দেওয়া উচিত এবং অবশ্যই তা ২৮ বছর বয়সের পরে।
মাঙ্গলিক কত প্রকারের হয়:
মাঙ্গলিক প্রধানত তিন প্রকারের হয়– ১) একক ২) দ্বিতীয় ৩) তৃতীয়। কী ভাবে এই তিন ধরনের মাঙ্গলিকের প্রকারভেদ করা যায়?
লগ্ন থেকে মঙ্গল যখন প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম, দ্বাদশ লগ্নসাপেক্ষে ৬টা ঘরে অবস্থান করে, তখন একক বা প্রথম মাঙ্গলিক হয়। যখন চন্দ্র থেকে মঙ্গল প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম, দ্বাদশ অবস্থান করে, তখন দ্বিতীয় মাঙ্গলিক হয়। আবার যখন শুক্র থেকে মঙ্গল লগ্নে দ্বিতীয়, চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম, দ্বাদশ ঘরে অবস্থান করে তখন তৃতীয় মাঙ্গলিক হয়।
কারও জন্মছকে যদি তৃতীয় মাঙ্গলিক থাকে, আর তার বিয়ে যার সঙ্গে হচ্ছে তার জন্মছকে যদি একক মাঙ্গলিক থাকে, তা হলে সেই বিয়ে কিন্তু অশান্তি, মনোমালিন্য এবং শেষ অবধি বিচ্ছেদে গড়ায়। তাই মাঙ্গলিকের সঙ্গে মাঙ্গলিকের বিয়ে হলেও এককের সঙ্গে এককের, দ্বিতীয়ের সঙ্গে দ্বিতীয়, আর তৃতীয়র সঙ্গে তৃতীয়ের বিয়ে হলে সেই বিয়ে টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
সম্বন্ধ করে বিয়েতে নিঃসন্দেহে জন্মছকের বিচার করে মাঙ্গলিক-অমাঙ্গলিকের বিচার করে বিয়ে কেমন ভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। তবে এমন অনেকে আছে, যাদের ছোটবেলা থেকে কিংবা কলেজ থেকে সম্পর্ক রয়েছে, এবং ভবিষ্যতে বিয়ে করবে বলে ঠিক আছে। সে ক্ষেত্রে যখন তারা হঠাৎ জানতে পারবে যে এক জন মাঙ্গলিক আর অন্য জন অমাঙ্গলিক, তখন তারা কী করবে? তাদের এত দিনের একটা স্থির সম্পর্ক কি তখন তারা শেষ করে দেবে?
অনেক সময়ে দেখা যায় যে, মাঙ্গলিক জাতক বা জাতিকা বহু ক্ষেত্রেই প্রেমে ব্যর্থ হয়। তাদের পক্ষে যে কোনও সম্পর্কই বাঁচানো মুশকিল। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ছক বিচার না করে বিয়ে হওয়ার বছর দুইয়ের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বলা যায় যে মানব জীবনে বিশেষ করে বিবাহিত জীবনে মঙ্গল বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
মঙ্গল গ্রহ জাতক জাতিকার জীবনে ঠিক কী রকম প্রভাব বিস্তার করে?
মাঙ্গলিকের সঙ্গে অমাঙ্গলিকের যদি বিয়ে হয়, তাহলে সমস্যাটা থেকেই যায়। এ বার আসা যাক শারীরিক সমস্যায়, মাঙ্গলিক দোষযুক্ত ব্যক্তির শরীর কেমন যাবে?
তাই বিয়ের আগে এই সকল শারীরিক সমস্যার বিচার ও প্রতিবিধান করিয়ে নেওয়া উচিত।
মঙ্গলের কারণে সম্পত্তি সম্পর্কিত সমস্যাও ঘটতে পারে, সে ক্ষেত্রে বলা যায়:
এই মঙ্গলদোষ বা মাঙ্গলিক অবস্থা থেকে কী উপায় উদ্ধার পাওয়া সম্ভব হবে?
মঙ্গলদোষ সম্পূর্ণ ভাবে প্রশমিত করা সম্ভব। জন্মছক বিচার করে আগে দেখে নিতে হবে যে মাঙ্গলিক হালকা না ভারী প্রকৃতির। সেই অনুযায়ী পূজা-পার্বণ করতে হবে। রুদ্রাভিষেকের মাধ্যমে এর সমাধান ও প্রতিকার করা যায়। কোনও বিচক্ষণ জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া উচিত এ ক্ষেত্রে। সেই পরামর্শ অনুসরণ করে নিজের জীবনের এই গুরুতর সমস্যাগুলি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।
দেশের প্রখ্যাত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদদের অন্যতম ডা: সোহিনী শাস্ত্রী।
ডা: সোহিনী শাস্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের দূরভাষ নম্বর: +91 91635 32538 / +91 90381 36660
ওয়েবসাইট: sohinisastri.com
ফেসবুক: facebook.com/drsohinisastri
ইউটিউব: youtube.com/@dr.sohinisastribestastrolo2355/
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।