‘জনসনস্ বেবি’
জন্মের পরের মুহূর্ত থেকেই শিশুরা স্পর্শ পছন্দ করে, তা সে তাকে কোলে নেওয়া হোক কিংবা আদর করা। এই স্নেহশীল স্পর্শ মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সংযোগ আরও দৃঢ় করে তোলে। সেই কারণেই শিশুকে নিয়মিত তেল মালিশ করা উচিত। কারণ তেল মালিশের মধ্যে মিশে থাকে স্নেহের স্পর্শ। এ ছাড়াও তেল মালিশের নানা রকম উপকারিতা রয়েছে। মালিশ যে শুধুমাত্র শিশুর রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, তা-ই নয়। বরং শিশুর শারীরিক, মানসিক চাপ কমাতে এবং শিশুর ঘুম যাতে ভাল হয়, তা নিশ্চিত করতেও সাহায্য করে।
এমনকি ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স’ (IAP) নবজাতক এবং শিশুদের মালিশের গুরুত্বের কথা স্বীকার করে মানসম্মত নির্দেশিকাও স্থির করেছে। এই নির্দেশিকা অনুযায়ী তেল মালিশ শিশুর বৃদ্ধি এবং পুষ্টিতে সাহায্য করে। তবে এই নির্দেশিকা প্রাকৃতিক অলিভ তেল এবং সর্ষের তেলকে সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়। কারণ শিশুর ত্বকের উপর তেল রয়ে গেলে তা রোমকূপকে বন্ধ করে দেয়। ফলে ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ কমে শিশুর গায়ে ফুসকুড়ি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রখর তাপের জন্য বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে গরম কালে শিশুর যত্ন নেওয়া বেশি কঠিন। তাই শিশুকে স্বাস্থ্যবান এবং আরামে রাখার জন্য কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার। গ্রীষ্মকালে শিশুর ঘাম বেশি হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাকে একাধিক বার স্নান করাতে হবে। তবে আপনার সন্তান যদি স্নান করতে পছন্দ করে, তা হলে তার ত্বক শীতল রাখার জন্যে তাকে স্নান করাতে পারেন। আবার গরম বলেই যে তাকে ঠান্ডা জলে স্নান করাতে হবে, এমন নয়। উষ্ণ গরম জলে আপনার শিশুকে স্নান করাতে পারেন, যা তাকে আরাম দেবে।
গ্রীষ্মকালে তেল মালিশ শিশুকে প্রখর তাপ থেকে আরাম দেয়। তাই দিনের ঠান্ডা সময়ে, যেমন ভোরবেলা অথবা সন্ধ্যায় হাওয়া চলাচল করতে পারে, এমন ঘরে শিশুকে মালিশ করা উচিত।
ঠিক তেমনই সঠিক তেল নির্বাচন করার ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারী এবং গরম তেল শিশুর ত্বকে ব্যবহার না করাই উচিত। তাই তো ‘জনসনস্ বেবি অয়েল’ শিশুদের জন্য একেবারে উপযুক্ত, কারণ এই তেল ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ। এর হালকা, তৈলাক্ত ভাববিহীন ধরন শিশুর ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে পুষ্টি জোগায়। এ ছাড়াও, ‘জনসনস্’-এর এই তেল শিশুর ত্বকের জন্য নিরাপদ কারণ এটি যে কোনও ক্ষতিকারক রাসায়নিক, যেমন প্যারাবেন, রঞ্জক এবং থ্যালেটস মুক্ত।
নবজাতককে তেল মালিশের ক্ষেত্রে কী কী বিষয় মনে রাখতে হবে?
শিশুর মালিশ শুরু করার আগে অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আপনার শিশুর জন্য তেল মালিশ সঠিক কি না, সঠিক হলেও তা কখন করবেন এবং কী ভাবে করবেন- এই বিষয়গুলি জেনে নেওয়া দরকার। মালিশ করার সময়ে শিশুর জন্য আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করাও খুব জরুরি। মালিশের সময় এবং পদ্ধতি ঋতুর পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিক করা দরকার। যেমন, গ্রীষ্মকালে স্নানের আগে এবং শীতকালে স্নানের পরে তেল মালিশ করা উচিত।
মালিশের জন্য শিশুকে খাওয়ানোর ২ ঘণ্টা পরে অথবা এমন একটি সময় নির্ধারণ করুন, যখন সে শান্ত এবং স্থির থাকবে। এতে তার কোনও রকম অস্বস্তি হবে না। খুব মৃদু এবং কোমল হাতে অল্প চাপ দিয়ে শিশুকে মালিশ করতে হবে। পাশাপাশি, খেয়াল রাখতে হবে শিশুর মাথা যেন কোনও ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত না হয়।
শিশুর বয়স অনুযায়ী তাকে মালিশ করার ধরনও পরিবর্তিত হয় -
নবজাতকদের ত্বক তাদের প্রথম বছরে ক্রমাগত তৈরি ও তার স্বাস্থ্যবৃদ্ধি হয়। তাই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরেই হালকা মালিশ করা উচিত। জন্ম পরবর্তী সময়ে খুব আলতো হাতের চাপ দিয়ে মালিশ শুরু করা দরকার। পেটে মালিশ করার সময়ে নাভির চার দিক জীবাণুমুক্ত করে নেওয়াও প্রয়োজন।
ছ’সপ্তাহ বা তার বেশি বয়সী শিশুরা নবজাতকদের তুলনায় স্থির হয়। তাই তাদের সম্পূর্ণ ভাবে মালিশ করা যেতে পারে। পেটে আলতো ভাবে ‘প্যাডলিং স্ট্রোক’ বাচ্চার পেটের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। আঙুলের সাহায্যে তাদের হাতে এবং মুখে মালিশ উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করে। এই সময়ে শিশুর চোখের দিকে তাকিয়ে মালিশ করলে তা বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুর বন্ধন দৃঢ় করতেও সাহায্য করবে।
ছ’মাস বা তার বেশি বয়সী শিশুরা অনেক বেশি সক্রিয় হয় এবং বসতে, হামাগুড়ি দিতে বা দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। তাদেরকে আরও সৃজনশীল উপায়ে, যেমন গান গাইতে গাইতে অথবা শিশুর সঙ্গে খেলার ছলে মালিশ করা যেতে পারে।
ঋতু যাই হোক না কেন, সঠিক তেল সহযোগে নিয়মিত মালিশ শিশুর ত্বকের জন্য উপকারী। তাই গ্রীষ্মেও আপনার সন্তানের ত্বকের যত্নের জন্য নিয়মিত ব্যবহার করুন ‘জনসনস্ বেবি অয়েল’।
এই প্রতিবেদনটি ‘জনসনস্ বেবি’-র সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।