Paromita Ghosh

রাজ্যে অনলাইনে কেনাবেচার সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছেন পারমিতা ঘোষ

গল্পের শুরুটা হয়েছিল ২০১৬ সালে। তখনও ফেসবুকে ‘মার্কেটপ্লেস’ ফিচারটি আসে নি।

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ১৮:১৯
Share:

পারমিতা ঘোষ

একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তা। কোনও পণ্যের প্রোমোশন হোক বা কেনা-বেচা, চোখ বন্ধ করে এখন অধিকাংশ মানুষের ভরসা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। কয়েক বছর আগেও পরিস্থিতিটা এমন ছিল না। তখন বাজার-হাট-দোকানেই চলতে বিকিকিনি। এই গল্পটা সেই সময়ের, যখন অনলাইনে কেনা-বেচা ততটাও জনপ্রিয় ছিল না।

গল্পের শুরুটা ২০১৬ সালে। তখনও ফেসবুকে ‘মার্কেটপ্লেস’ ফিচারটি আসে নি। এই গল্পের নায়িকা সেই সময়েই বাংলার মানুষের কাছে অনলাইনে বিক্রির ধারণাটা বদলে দিয়েছিলেন। নাম পারমিতা দাস। বলা যায়, এই রাজ্যে অনলাইন লাইভ সেলিং-এর শুরু তাঁর হাত ধরেই। বলা বাহুল্য, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বহু মহিলার কাছে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার অন্যতম নির্ভরযোগ্য মাধ্যম এই অনলাইন সেলিং।

হঠাৎ অনলাইনে বিক্রির ভাবনা কী ভাবে? কেমন ছিল যাত্রার শুরু? উত্তর দিতে গিয়ে খানিকটা আবেগপ্রবণ পারমিতা। প্রায় বছর সাতেক আগে নিছকই খেলার ছলে একটি ফেসবুক গ্রুপ বানিয়ে ছিলেন পারমিতা। নাম দেন ‘বিটিএম’। বর্তমানে এই গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ৩ লক্ষ মহিলা সদস্য। গ্রুপটি সম্পূর্ণ ভাবে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত এবং নিয়ন্ত্রিত। পারমিতা ও তাঁর টিমের নিরলস ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং তাঁদের আত্মবিশ্বাসের কারণেই আজ এই গ্রুপ অনলাইন সেলিং-এর দুনিয়ায় এক পরিচিত নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিটিএম-এর প্রদর্শনী

যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই গ্রুপ তৈরি হয়েছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা অবশ্য বদলেছে। নিয়মমাফিক এই গ্রুপে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র কেনা-বেচা হয়। পোশাক থেকে শুরু করে নানা ধরনের গয়না, বিভিন্ন ধরনের আনুষঙ্গিক সাজ সরঞ্জাম, আরও কত কী! তবে এ সবের পাশাপাশি, আরও একটি কারণে পরিচিতি বেড়েছে বিটিএম গ্রুপের। তা হল প্রদর্শনীর আয়োজন।

অনলাইন সেলারদের নিয়ে ২০১৮ সালে প্রথম অফলাইন এগজিবিশন শুরু করার কৃতিত্বও পারমিতা আর তার গ্রুপ বিটিএমেরই। এর পর থেকে প্রতি বছর এই গ্রুপের উদ্যোগে অনলাইন বিক্রেতাদের নিয়ে এমন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বলা বাহুল্য, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এই উইন্টার কার্নিভাল অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে। বিটিএম-এর সদস্যরা নিজেদের চেষ্টায় একাধিক নজরকাড়া জিনিসের পসরা সাজিয়ে প্রদর্শনী রঙিন করে তোলেন। ভিড়ও থাকে চোখে পড়ার মতো।

গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, মেয়েদের আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার নেপথ্যে অনলাইন সেলিং বড় ভূমিকা নেয়। পারিবারিক কাজের ফাঁকে, অল্প কিছু পুঁজি বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করার মতো সুবিধা রয়েছে এতে। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ সেলিং –এর মাধ্যমে ঘরে বসেই কেনা-বেচা করা যায় অনায়াসে। এতে কোনও ভৌগোলিক সীমাও নেই। অর্থাৎ কেনাকাটা চলতে পারে বিশ্বজুড়ে। আন্তর্জাল দুনিয়ার এই সত্য বোধহয় সময়ের আগেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন পারমিতা। সেই পথে চলে তাই বর্তমান বাংলার মানুষের কাছে এক উদাহরণ হয়ে উঠেছেন তিনি।

পারমিতা ঘোষ

বলা বাহুল্য, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিটিএম-এর একের পর এক প্রদর্শনী অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে। সেই কারণেই বোধহয় শেষ এগজিবিশন ‘উইন্টার কার্নিভাল’-এ নিজেদের প্রচার করতে এসেছিল বহুজাতিক সংস্থা, এসেছিলেন মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ওয়েব সিরিজের কলাকুশলীরাও। উইন্টার কার্নিভালের পরে ফের আরও একটি বড় ইভেন্টের আয়োজন করতে চলেছে বিটিএম গ্রুপ। ২০২৩-এর প্রথম প্রদর্শনী ‘চৈত্র কার্নিভাল’। ৬ থেকে ৮ এপ্রিল, তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান হবে কলকাতা রেঞ্জার্স ক্লাবে। অনলাইন বিক্রেতারা তাঁদের বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা নিয়ে উপস্থিত থাকবেন সেখানে।

রাজ্যের মানুষের কাছে অনলাইন জগতের এক অজানা দরজা খুলে দিয়েছেন পারমিতা ঘোষ। সে অর্থে তিনি ‘সর্বজয়া’। নারী দিবসের লগ্নে পারমিতা সকলকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবং আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এই কার্নিভালে।

এই প্রতিবেদনটি 'উই মেক আস' -এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন