প্রতীকী চিত্র
সমগ্র বিশ্বেই আজ অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার হার বাড়ছে। ফলে মানুষ দেদার আক্রান্ত হচ্ছে ওবেসিটি নামক ব্যাধিতে। ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে নানা ধরনের রোগের ভয় থাকে। যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, হৃদ্রোগ বা স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
এমনকি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, স্থূলতা মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে এই ধরনের রোগ হওয়ার প্রবণতা অন্যান্য দেশের থেকে বেশি লক্ষণীয়। তাই সুস্থ সবল জীবন যাপন করতে নিজেদের ওজনের বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
কিন্তু সতর্ক হওয়ার আগে বুঝতে হবে আপনি কী আদৌ অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন? কী ভাবে জানবেন আপনার জন্য আদর্শ ওজন কোনটি?
বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই হল একটি গাণিতিক ফর্মুলা, যার মাধ্যমে আপনার উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত, তা নির্ণয় করা যায়। অর্থাৎ, বিএমআই = ওজন (কেজি) / উচ্চতা (মিটার) ২
বিভিন্ন অনলাইন ক্যালকুলেটরের মাধ্যমেও হিসাব করা যায় এই তথ্য। চাইলে আপনি মোবাইলে অ্যাপ বা বিএমআই ক্যালকুলেটর ডাউনলোড করে নিতে পারেন। আর তা থেকেই জেনে নিতে পারেন আপনার আদর্শ ওজন কোনটি।
সাধারণত কোনও ব্যাক্তির বিএমআই যদি ২০-২৪.৯ কেজি/মিটার স্কোয়ার হয়, তবে তার ওজন স্বাভাবিক মাত্রায় আছে বলে গণ্য করা হয়। তবে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মধ্যে এটি ২৩–এর নীচে থাকাই কাম্য।
কারও বিএমআই যদি ২৫ থেকে ২৯.৯কেজি প্রতি মিটার স্কোয়ারের মধ্যে হয়, তা হলে ওজন অনুযায়ী তাঁর ওভারওয়েট বা অতিরিক্ত ওজন বলা যায়। তাঁদের এই বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন।
যদি কোনও ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার ইত্যাদি সমস্যা থাকে, তবে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বিএমআই ৩০–এর উপর থাকা মানে আপনি স্থূলতা বা ওবেসিটির সমস্যায় ভুগছেন। যাঁদের বিএমআই ৩৫-এর বেশি, তাঁদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। সে ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এমন ক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে পারেন। কারও কারও ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারেরও দরকার হতে পারে। তবে মনে রাখবেন, সবটাই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে করা উচিত। অন্যথায় হিতে বিপরীত হতে পারে।
নিজের ওজন বিষয়ে সকলেরই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই বাড়তি ওজন নানা রোগ ডেকে আনে শরীরে। তাই কেবল এই বিষয়ে সচেতনতার মাধ্যমেই অনেক জটিল রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।