অ্যালার্জির বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়
দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকার জন্য কিংবা রোগ প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন কারণে ওষুধ সেবন করি আমরা। অথচ অনেক ক্ষেত্রে সেই ওষুধই আবার সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই সমস্যাগুলির মধ্যে প্রথমেই আসে অ্যালার্জি। ওষুধের অ্যালার্জি নিয়ে তুলনামূলকভাবে কম আলোচনা করে থাকি আমরা। তবে চিকিৎসকরা অনেক সময়েই এমন ওষুধ পেসক্রাইব করেন যার নানা ধরনের গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। মূলত অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথা উপশমকারী এবং চেতনানাশক ওষুধের ক্ষেত্রে এই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অথছ চিকিৎসকদের মতে, যে কোনও ওষুধই নির্দিষ্ট রোগীদের মধ্যে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। অতএব, আপনার হাতে কী বিকল্প রয়েছে? এবং কোন উপায়ে আপনি নিরাপদে ওষুধ খেতে পারবেন? কী ভাবে রুখে দেওয়া যায় এই অ্যালার্জি? এই সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালের অ্যালার্জি এবং ইমিউনোলজি বিভাগ এবং রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরামর্শদাতা চিকিৎসক শৈবাল মৈত্র।
ওষুধের অ্যালার্জির ক্ষেত্রে দেখা যায়, রোগীরা প্রায়শই জরুরি অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ নিয়ে আসেন যা থেকে সংশ্লিষ্ট রোগীর অ্যালার্জির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এর মধ্যে খুব সাধারণ উপসর্গগুলি হল শ্বাসকষ্ট, শরীরের বিভিন্ন অংশে বা সারা শরীর জুড়ে ফোলাভাব, দম বন্ধ হয়ে যাওয়া, ফুসকুড়ি ইত্যাদি। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ওটিসি ওষুধেও অ্যানাফিল্যাক্সিস হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রোগীর বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, “ওষুধের অ্যালার্জির ফলে অনেক সময়েই বিপজ্জনক উপসর্গ দেখা দেয়। তা নির্ভর করে অ্যালার্জেন এবং এর প্রতি আক্রান্ত রোগীর সংবেদনশীলতার উপর। ওষুধের থেকে হওয়া গুরুতর অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হিসাবে অসুস্থতার কারণে পড়ে যাওয়া, জ্ঞান হারানো, বিপি বা পালসের অনুপস্থিতির মতো লক্ষণ দেখা দেয়। এই ধরনের উপসর্গ নিয়ে রোগীরা যখন জরুরি অবস্থায় আমার কাছে আসেন, তখন তাঁদের অবিলম্বে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। যাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা যায় এবং পর্যবেক্ষণে রাখা যায়।”
চিকিৎসক শৈবাল মৈত্র আরও জানাচ্ছেন, “কখনও কখনও ওষুধ থেকে অ্যালার্জি খুব খারাপ দিকে যেতে পারে। এবং অ্যালার্জি যদি তীব্র হয় তা হলে সে ক্ষেত্রে তা মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে একটা স্বস্তির বিষয় রয়েছে। উপযুক্ত মূল্যায়ন এবং রোগীর অবস্থার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারলে এই বিপজ্জনক পরিণতির হাত থেকে রেহাই মিলতে পারে।” মূল্যায়নের সময় চিকিৎসক সাধারণত রোগীর বর্তমান অবস্থা যেমন অ্যালার্জিক অ্যাজমা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, মেটোপিক ডার্মাটাইটিস, নির্দিষ্ট কিছু খাবারে অ্যালার্জি ইত্যাদি পরীক্ষা করেন। এগুলি ওষুধের থেকে অ্যালার্জি হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে। তা ছাড়াও আগে পরিবারে কোনও সদস্যের ওষুধ থেকে অ্যালার্জির ঘটনা থাকলে অন্য সদস্যের অ্যালার্জি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই ধরনের মূল্যায়ন বিশেষ করে কোনও অস্ত্রোপচারের আগে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের দলের করা উচিত যেখানে অ্যালার্জিস্ট, প্রাথমিক চিকিৎসক, ইন্টার্নিস্ট এবং অ্যানাস্থিটিস্ট থাকবে। সুতরাং, আপনার যদি মনে হয় আগের কোনও অবস্থার জন্য অথবা খাবারে অ্যালার্জির কারণে কোনও নির্দিষ্ট ওষুধে আপনার অ্যালার্জি হতে পারে তা হলে অবশ্যই অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হসপিটালের মতো নামী হাসপাতালে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বলা বাহুল্য, আপনি যদি কোনও রকম উপসর্গে ভুগছেন এবং ভাবছেন জরুরি যত্নের প্রয়োজন তা হলেও একই ব্যবস্থা নিন।
এই প্রতিবেদনটি ' অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হসপিটাল’ -এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।