কার্ডিয়োপালমোনারি ক্রিটিক্যাল কেয়ার। ছবি: সংগৃহীত
২০২০ সালে বিশ্ব জুড়ে হওয়া অতিমারি প্রত্যেকের মনে এক ভয়ানক দাগ কেটে গিয়েছে। বিশ্বের ইতিহাসের এই কালো অধ্যায় কেড়ে নিয়েছে বহু মানুষের প্রাণ। এই অতিমারি বদলে দিয়েছে চিকিৎসার বিভিন্ন ক্ষেত্রও। পরিসংখ্যাম বলছে, অতিমারি পরবর্তী মানুষের শরীরে এমন রোগ বাসা বাঁধছে, যার ফলে বিস্তর ক্ষতি হচ্ছে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কার্ডিয়োপালমোনারি ক্রিটিক্যাল কেয়ারে। কিন্তু এটি কী? কী ভাবে কাজ করে এই আপাতকালীন বিভাগটি? আলোচনায় অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের কনসালটেন্ট তথা ইসিএমও ফিজিশিয়ান চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী।
প্রাথমিকভাবে ক্রিটিকাল কেয়ার হল সেই বিভাগ, যেখানে কোনও রোগীকে গুরুতর অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। এই বিভাগই পারে মূমূর্ষু রোগীকে ফের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে দিতে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ক্রিটিকাল কেয়ারের অর্থ অর্গান সাপোর্ট। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নির্দিষ্ট ছন্দে কাজ করে। যার ফলে আমরা প্রতিনিয়ত স্বাভাবিকভাবে দিনযাপন করি। আমাদের হৃদপিণ্ড, লিভার, যকৃত, ফুসফুস ও মস্তিষ্ক এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কোনও একটিতে যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তা হলে আমাদের সম্পূর্ণ শারীরবৃত্তিয় ক্রিয়াকলাপে সমস্যা দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকলে, তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ারে ভর্তি করা হয়। যেখানে রোগীকে দিনের ২৪ ঘণ্টাই বিশেষ পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা হয়। কোনও রোগীর যদি হৃদপিণ্ডে বা শ্বাসযন্ত্রে কোনও গুরুতর সমস্যা থাকে, তখন সংশ্লিষ্ট রোগীকে নিয়ে আসা কার্ডিয়োপালমোনারি ক্রিটিক্যাল কেয়ারে।
কিন্তু কোন পর্যায়ে রোগীকে এই বিভাগে নিয়ে আসা হয়? উত্তরে চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, “সংশ্লিষ্ট রোগীর শারীরিক অবস্থার উপরে নির্ভর করেই সেই রোগীকে বিভিন্ন লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম, যেমন ভেন্টিলেশন বা ইসিএমও (এক্সট্রাকর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন)-তে রাখা হয়। প্রয়োজনের ভিত্তিতে তাঁদের অঙ্গ সহায়তাও দেওয়া হতে পারে।” তবে সব ক্ষেত্রেই রোগীকে প্রাথমিক পর্যালোচনার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে জরুরি অবস্থা যে কোনও সময়ে আসতে পারে। এবং তার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকেন ক্রিটিক্যাল কেয়ারের সঙ্গে যুক্ত থাকা চিকিৎসক এবং নার্সরা। তবে অতিমারি পরবর্তী সময়, এই বিভাগে রোগীর সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে আরও দক্ষতার সঙ্গে এই বিভাগ সামলাতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। অর্পণ চক্রবর্তী একটি পরিসংখ্যানও দিলেন। জানালেন, ভারতে হৃদরোগীদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আবার শ্বাসযন্ত্রের বিবেচনা করলে, সিওপিডি বা হাঁপানির মতো দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসেন প্রায় ৪-৫ শতাংশ মানুষ। অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী রোগীদের ক্ষেত্রে সঙ্কট বা ঝুঁকির হার তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। ফলে, যত্ন নেওয়ার সময় অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয় চিকিৎসকদের।
দীর্ঘ দিন ধরে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের কার্ডিয়োপালমোনারি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটকে দক্ষ হাতে সামলাচ্ছেন চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী। এই বিভাগে ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্য কর্মী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক উপস্থিত থাকেন। তাই যে কোনও সঙ্কটকালীন মুহূর্তে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে এই ইউনিটে ভর্তি করার ক্ষেত্রে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের উপরে ভরসা করতে পারেন আপনি।
এই প্রতিবেদনটি ‘অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।